পৌনে ২ লাখ মানুষের জন্য চক্ষু বিশেষজ্ঞ একজন
দেশে প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষের জন্য মাত্র একজন চক্ষু চিকিৎসক রয়েছেন। চিকিৎসকের অপ্রতুলতার কারণে বছরে এক লাখ ৩০ হাজার মানুষ ছানিজনিত দৃষ্টিহীনতার নিরব শিকার হচ্ছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ চক্ষুচিকিৎসক সমিতি (ওএসবি) ও চক্ষু স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত আন্তর্জাতিক এনজিও ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব নিবারণের লক্ষ্যে প্রণীত ‘ভিশন ২০২০’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।
কর্মশালায় উপস্থাপিত কয়েকটি গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, চক্ষু স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের অনেক পেছনে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর দ্যা প্রিভেনশন অব ব্লাইন্ডনেসের (আইএপিবি) গবেষণার ফল অনুযায়ী, দেশে প্রতি ১০ লাখ জনগণের মধ্যে চোখের ছানি অপারেশন হয় এক হাজার ৩শ জনের। অথচ ভারতে এ সংখ্যা ৬ হাজার এবং নেপালে ৩ হাজার ৮৪৫ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চক্ষুচিকিৎসার সহযোগী কর্মী সংখ্যার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অর্জন করতে হলে জনসংখ্যা অনুপাতে বিপুল মানবসম্পদ বৃদ্ধি প্রয়োজন। একই ক্ষেত্রে ভারত ও নেপালের অগ্রগতি অনেক। দেশে প্রতি একজন সহযোগী কর্মীর বিপরীতে রয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭৩ রোগী, যেখানে ভারতে রয়েছে ৭২ হাজার ৪৭৪ এবং নেপালে ৫৯ হাজার ৯১ জন।
তারা বলেন, দক্ষ চক্ষু স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে ভিশন ২০২০ ও সার্বজনীন চক্ষুস্বাস্থ্য অর্জনে দেশের প্রয়োজনে আরো বেশি শল্যচিকিৎসক ও সহযোগী কর্মী দরকার। আর দক্ষ এ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন চক্ষুস্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো।
ওএসবি প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মো. শরফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন এশিয়া প্যাসিফিক একাডেমি অব অফথালমোলোজির ভাইস-প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আভা হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। ওএসবি মহাসচিব অধ্যাপক এএইচএম এনায়েত হুসেন, ন্যাশনাল আই কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক গোলাম মোস্তাফা, আইএনজিও চেয়ার ও সাইটসেভারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর খন্দকার আরিফুল ইসলাম এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতি ১০ লাখে ছানি অপারেশনের হার ৩ হাজারে উন্নীত করতে বিদ্যমান চক্ষুচিকিৎসকদের অন্তত ৯০ শতাংশকে চোখের মাইক্রোসার্জারির প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। যেসব রোগীদের ছানি অপারেশন ইতোমধ্যে জরুরি হয়ে পড়েছে তাদের অপারেশন সম্পন্ন করতে এটা অত্যন্ত দরকারি।
চক্ষুচিকিৎসায় জনবল বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশে এখনও কোনো সুব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বলে তারা উল্লেখ করেন।
এমইউ/এসকেডি/এএইচ/আরআইপি