নদীর জন্য মহাপরিকল্পনা, ভিন্নমত নিষ্পত্তিতে হচ্ছে কমিটি
ঢাকার চারপাশের নদীগুলো নিয়ে করা মহাপরিকল্পনার (মাস্টার প্ল্যান) বিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের ভিন্নমত নিষ্পত্তিতে কয়েকটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (১৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে ঢাকার চারপাশের নদী দখলমুক্ত, দূষণরোধ ও নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য গঠিত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন কমিটির সভা শেষে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যানের অংশ হিসেবে যে সমস্ত নদীতে অবৈধ দখল আছে ইতিমধ্যে আমাদের নৌ মন্ত্রণালয় দখলমুক্ত করেছে। উচ্ছেদকৃত স্থানগুলো সংরক্ষণ এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণের জন্য যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা যেন দ্রুততার সাথে বাস্তবায়ন করেন। এর মধ্যে কোথাও যদি সমন্বয়হীনতা থাকে, সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যে কাজগুলো করবে সেগুলো সিটি কর্পোরেশনের সাথে সমন্বয় করে করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মাস্টার প্ল্যানের চাহিদা মোতাবেক সিটি করপোরেশনের সাথে ভিন্নমত নিষ্পত্তি করার জন্য কয়েকটি কমিটি করার কথা আলোচনা হয়েছে। আলোচনা করে আমরা কমিটি গঠন করে দেব। আর কোথায় কী প্রকল্প আছে এবং কোথায় কোন প্রকল্প প্রয়োজন সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।’
খাল উদ্ধারের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে যে সমস্ত খাল রয়েছে সেগুলো সংস্কার ও ওয়াকওয়ে তৈরি করে সম্ভাব্য যত সুযোগ আছে তা কাজে লাগানোর জন্য দু’একটা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আর কোথায় কোথায় প্রকল্প নেয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছি। বুড়িগঙ্গার নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য যমুনা নদীতে যে জায়গায় ড্রেজিং করা দরকার তা নিয়ে নৌ সচিবের সাথে কথা হয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন কাজটি দ্রুত করছেন। করলে সেখানে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে বুড়িগঙ্গার নাব্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’
বর্জ্য থেকে উত্তরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সমন্বিতভাবে কাজ করছি। না হলে কাজের ফল বিলম্বিত হবে। আশা করি দ্রুততার সাথে কাজ শুরু করা যাবে। আর দক্ষিণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জন্য এ ধরনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চট্টগ্রামেও প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে যাতে বর্জ্য পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উপাদন করা যায়।’
তরল দূষণের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘তরল দূষণ থেকে রক্ষার জন্য ওয়াসার এমডিকে বলেছি, প্ল্যান্ট করার জন্য এগোচ্ছি। জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে দরপত্র করার কাজ চলছে।’
অনুমোদিত মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ আরম্ভ হয়ে গেছে। ১০ বছরের মধ্যে শেষ হবে। প্রথম দফার কাজ সন্তোষজনক সময়ের মধ্যে শেষ হবে। আমাদের একবছর হয়ে গেছে। কোভিডের কারণে আউটডোরের কাজগুলো সীমিত হয়ে গিয়েছিল। এখন আমরা দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করছি।’
বৃত্তাকার নৌপথ বাস্তবায়ন নিয়ে ১৩টি ব্রিজের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেগুলো নৌপথে বাধার সৃষ্টি করছে সেগুলো রিভিউ করার জন্য আলোচনা হয়েছে। সেগুলো স্থানীয় সরকার বিভাগের হলে আমরা বসবো এবং সেগুলোকে ভেঙে জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণ করার চিন্তা করা হচ্ছে।’
সভায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এআরএ/পিআর