টিকা ক্রয়ে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ঋণ মঞ্জুরের আহ্বান অর্থমন্ত্রীর
করোনার টিকা ক্রয়ে জনসংখ্যার ভিত্তিতে ন্যায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরে বিশ্বব্যাংকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিশ্বব্যাংক–আইএমএফ এর বার্ষিক সভা-২০২০ এর অংশ হিসাবে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল ও বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. হার্টউইগ শ্যেফার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অর্থমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব অংশ নেন। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের পক্ষে মি. হার্টউইগ শ্যেফার ও মিজ মার্সি মিয়াং টেম্বন উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অব্যাহত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি করোনার টিকা ক্রয়ে ঋণ সহায়তার ক্ষেত্রে আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য ন্যায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে মি. হার্টউইগ শ্যেফার সহযোগিতা কামনা করেন।
অর্থমন্ত্রী করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের গৃহীত দ্রুত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। তিনি করোনা মোকাবিলায় দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। বিশ্বব্যাংকও এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী করোনার টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব মানুষের জন্য টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে বর্তমান ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের আইডিএ ১৯ এর আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসাবে করোনা টিকা আমদানি/ক্রয়, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণে ব্যবহারের উদ্দশ্যে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তার জন্য বাংলাদেশের পক্ষে অনুরোধ জানানো হয়। করোনাজনিত কারণে সংঘটিত দেশের বিভিন্নমুখী ক্ষয়-ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ৫০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে বর্তমান ২০২০-২১ অর্থ বছরে জরুরি ভিত্তিতে অন্তত ২৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়করণে বিশ্বব্যাংকের প্রতি জোর অনুরোধ জানায় বাংলাদেশ।
চলমান করোনা মহামারির কারণে দেশের ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখার লক্ষ্যে বর্তমান ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের (ডিপিসি) প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় কিস্তির ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসাবে দ্রুত ছাড়করণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে। জবস ডিপিসির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলীর অধিকাংশই ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট শর্তও দ্রুতই পূরণ সম্ভব হবে মর্মে অর্থবিভাগ সভাকে অবহিত করেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আলোচনাকালে বলেন, আইডিএ-১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ কোর আইডিএ হতে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এসইউএফ হতে আরও দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যা আইডিএভুক্ত দেশের মধ্যে একক সর্বোচ্চ পরিমাণ।
তিনি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করায়, আইডিএ-১৯ এর আওতায় বাংলাদেশকে বিগত বছরের তুলনায় অধিক পরিমাণে বরাদ্দ প্রদানের অনুরোধ করেন।
এমইউএইচ/এএইচ/এমকেএইচ