ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

করোনার কারণে জর্ডান যেতে ভয় পাচ্ছেন নারী গার্মেন্টসকর্মীরা!

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৫:১০ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২০

রোববার, দুপুর ১টা। রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন তরুণী। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার টেলিফোন পেয়ে তারা দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আজ আসেননি।

তরুণীদের একজন বললেন, ‘স্যাররা তো আর আমাদের দুঃখ-কষ্ট বোঝে না। গাজীপুর থেকে সকালে এসে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করলাম কিন্তু দেখা পেলাম না। জর্ডানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে খবর পেয়েছি। দরকার নেই যাওয়ার। আরেকদিন এসে পাসপোর্ট তুলে নিয়ে যাব।’

উপস্থিত কেউ একজন তার সুরে বললেন, ‘সাত মাস অপেক্ষা যখন করেছি, আরও দু-এক মাস অপেক্ষা করি। এর মধ্যে পাসপোর্ট তুলে নবায়নের জন্য পাসপোর্ট অফিসে জমা দেব।’

কৌতূহলবশত সামনে এগিয়ে তরুণীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, তারা গার্মেন্টসকর্মী হিসেবে জর্ডান যাওয়ার জন্য সাক্ষাৎকার দিয়ে সরকারিভাবে মনোনীত হয়েছিলেন। সরকার নির্ধারিত ফি জমাসহ পাসপোর্টও জমা দিয়েছিলেন। চলতি বছরের শুরুতেই কর্মস্থলে যোগদান করার কথা ছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী করোনার কারণে তাদের যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কয়েকজনের পাসপোর্টের মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ায় তাদের মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাসপোর্ট উত্তোলন করে ফের জমা দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু আজ এসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে দফতরে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন।

আসমা নামের একজন গার্মেন্টসকর্মী জানান, তাদের অধিকাংশেরই জর্ডানের বিভিন্ন গার্মেন্টসে চাকরির পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। গার্মেন্টসগুলোতে কাজের পরিবেশ অনেক ভালো। বেতনও মন্দ না। সবচেয়ে বড় কথা সরকারিভাবে সব মিলিয়ে খরচ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। তাছাড়া এ টাকার মধ্যে বড় একটা অংশ জর্ডানের প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগদানের পর ফেরত দেয়া হয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় আর যাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

কী কারণে যেতে চাচ্ছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে আসমা বেগম জানান, জর্ডানে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে চাকরিরত অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে দুদিন আগে বিভিন্ন গার্মেন্টসে কমপক্ষে ২০০ জন গার্মেন্টসকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাছাড়া কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে তারা যেতে পারবেন সেই নিশ্চয়তাও নেই। তাই না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

রেণু আক্তার নামে আরেক তরুণী বলেন, জীবন ও জীবিকার তাগিদে করোনার ঝুঁকি জেনেও দ্রুত জর্ডান গিয়ে কাজে যোগ দিতে চাই। সংসারের একটু সচ্ছলতার জন্য সাত বছরের ছেলেসন্তানকে মায়ের কাছে রেখে যেতে হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জর্ডান থেকে সর্বমোট দুই হাজার ১৯৭ জন গামেন্টসকর্মী ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন ও নারী এক হাজার ৭৮৯ জন। ৮৮ জন আউটপাসের মাধ্যমে ও দুই হাজার ১০৯ জন পাসপোর্টের মাধ্যমে ফিরে এসেছেন।

এমইউ/বিএ/পিআর