সচিবালয়েও কাশফুলের শোভা
মেঘ-রোদের লুকোচুরি খেলা, এর মাঝেই হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি; আর কাশফুলের শুভ্র শোভা- এই নিয়েই বাংলার প্রকৃতির তৃতীয় ঋতু শরৎ। শরতে নদীর তীরে কাশফুলের শুভ্র দুলানিতে আপ্লুত হয় না, এমন মানুষ নেই।
রাজধানীর আশপাশেও কাশফুলের দেখা মেলে, তাই প্রকৃতিমুগ্ধ মানুষ ছুটে যান শুভ্র সৌন্দর্য ছুঁয়ে দিতে। এবার শরৎ তার কাশের শুভ্র শোভা মেলে ধরেছে প্রশাসনের প্রাণ সচিবালয়ে। অনেকের কাছে মিথ্যা মনে হলেও সচিবালয়ে ২০তলা ভবন নির্মাণের পরিত্যক্ত অংশে দেখা মিলবে অপূর্ব এ শুভ্রসত্যের।
সচিবালয়ের উত্তর-পশ্চিম দিকে ৩২৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০তলা ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। এ জন্য মসজিদের উত্তর পাশ, তিন নম্বর ভবনের পেছন দিক ও ক্লিনিক ভবনের সামনের অংশে বেড়া দিয়ে স্থানটি ঘিরে ফেলা হয়েছিল।
এই ভবন নির্মাণের ঠিকাদার ছিলেন জি কে শামীম। ঘিরে ফেলা অংশে নির্মাণকাজের জন্য আনা হয়েছিল বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, খোঁড়া হয়েছিল মাটি। কিন্তু গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম র্যাবের হাতে ধরা পড়েন। বন্ধ হয়ে যায় সচিবালয়ে ২০তলা ভবন নির্মাণকাজ। এরপর থেকেই ওই অংশটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এই সুযোগে সেখানে বেড়ে উঠেছে লতাগুল্ম, ঘাস, ঝোপ।
শরতে সেখানে এখন কাশফুলের একচ্ছত্র আধিপত্য। বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা অংশটি সিল করে দেয়া। কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। সচিবালয়ের মতো জায়গায় কাশফুলের এমন শোভা দূর থেকে দেখে আপ্লুত হন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দর্শনার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ছিল আশ্বিনের ১৪ তারিখ। বাংলা সনের ভাদ্র ও আশ্বিন শরৎকাল। মঙ্গলবার বিভিন্ন ভবন থেকে ঘিরে রাখা অংশ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, প্রায় পুরো অংশটিই কাশফুলে সাদা হয়ে আছে। এরমধ্যেই পড়ে আছে মরিচা ধরা রডসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
সংবাদ কাভার করতে প্রতিদিন সচিবালয়ে যান সময় টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার প্রসূন আশীষ। সচিবালয়ের কাশফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ প্রসূন বলেন, সচিবালয়ের মতো জায়গায় কাশফুলের এমন শোভা কল্পনাই করা যায় না। তুমুল কর্মতৎপরতার এই স্থানে এ যেন এক চিলতে শুভ্রস্বস্তি।
তিনি বলেন, হয়তো আমার মতো এই ভালোলাগার অনুভূতি আরও অনেকের। প্রকল্পটি বন্ধ হওয়ার হয়েতো বেশ ক্ষতি আছে, সঙ্গে চোখ ছুঁয়ে মনে এনেছে কিছু আনন্দও।
আরএমএম/বিএ/পিআর