পুলিশি বাধা ঠেলে সড়কে বিহারী ক্যাম্পের তাজিয়া মিছিল
করোনাভাইরাসের কারণে এবার আশুরায় অনুমতি মেলেনি তাজিয়া মিছিলের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানী মোহাম্মদপুরের বিহারী ক্যাম্পেই আশুরা পালন করছেন সেখানে আটকাপড়া পাকিস্তানিরা। তবে একটা সময় তারা পুলিশি বাধা পেরিয়ে বাইরে এসে ওই এলাকার মধ্যে মিছিল করেন তারা। তবে হোসেনী দালান চত্বরেই সীমাবদ্ধ ছিল পুরান ঢাকার শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল।
আজ (৩০ আগস্ট) মহররম মাসের ১০ তারিখ, কারবালায় ঘটে যাওয়া শোকাবহ ঘটনা ছাড়াও ইসলামের ইতিহাসে অসংখ্য তাৎপর্যময় ঘটনার জন্য দিবসটি অনন্য। প্রতিবার এ দিবসটি উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায় তাজিয়া মিছিল করে থাকে। তবে করোনার কারণে এবার এর ব্যতিক্রম ঘটছে। সংক্রমণ ঠেকাতে তাজিয়া মিছিল ও শোক অনুষ্ঠান পালনের অনুমতি দেয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ফলে বিহারী ক্যাম্প ছাড়াও লালবাগের শিয়া মসজিদ থেকেও বের হয়নি মিছিল। মোটকথা মহামারিতে অবরুদ্ধ রয়েছে এবারের তাজিয়া মিছিল।
ডিএমপির নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এবার হোসেনী দালান থেকে তাজিয়া মিছিল সড়কে আসবে না। হোসেনী দালান চত্বরেই মিছিল হবে বলে ইমামবাড়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল।
মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্পে পুলিশের বাধা পেয়ে কিছুক্ষণ সেখানেই অবস্থান করেন ক্যাম্পবাসী। এরপর বাধা উপেক্ষা করে বেরিয়ে আসেন তারা। প্রদক্ষিণ করেন আশপাশের এলাকা। এ সময় মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব। অধিকাংশই ছিলেন মাস্কবিহীন।
শিয়া সম্প্রদায় আশুরাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করে থাকেন। অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত এ আশুরা।
হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) কারবালার ফোরাত নদীর তীরে ঘাতক ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদাতবরণ করেন।
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে ইসলামের ইতিহাসের এ শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে মুসলিমরা। আজও থাকছে- বিশেষ মোনাজাত, দোয়া মাহফিল ও কোরআনখানি। দিনটিতে আগের বা পরের দিনে রোজাও রাখেন অনেকে।
শিয়া সম্প্রদায় আশুরার দিনটিকে বিশেষভাবে পালন করে থাকে। আশুরার দিনে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের হোসেনী দালান থেকে বের হওয়া শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল ঐতিহ্যবাহী। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেও তারা তাজিয়া মিছিল বের করে।
দিনটি কেন তাৎপর্যপূর্ণ?
ইসলামের ইতিহাস অনুযায়ী- এ দিনেই পৃথিবীর সৃষ্টি, হযরত আইয়ুব (আ.)-এর কঠিন পীড়া থেকে মুক্তি, হযরত ঈসা (আ.)-এর আসমানে জীবিত অবস্থায় উঠে যাওয়া, হজরত নূহ (আ.)-এর নৌকা ঝড়-তুফানের কবল থেকে মুক্তি পাওয়াসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে মহররমের ১০ তারিখ অবিস্মরণীয় ও মহিমান্বিত।
সর্বোপরি পৃথিবীর ধ্বংস তথা কিয়ামতও মহররমের এ দিনেই ঘটবে বলে বিভিন্ন ইসলামি গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে।
এইচএস/এফআর/এমএস