শনাক্ত রোগীর সংখ্যা : স্বাস্থ্য অধিদফতর-আইইডিসিআর এত ব্যবধান!
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা আসলে কত? স্বাস্থ্য অধিদফতর ও এর আওতাধীন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তথ্য দেখে এখন গণমাধ্যমকর্মীসহ সবার মুখেই এমন প্রশ্ন।
গতকাল রোববার (১৬ আগস্ট) অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বলা হয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৯ জন । ওই বিজ্ঞপ্তির পর আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৭৯ জন। অর্থাৎ স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রদত্ত সংখ্যার সঙ্গে আইইডিসিআরের সংখ্যার ব্যবধান ৭০ হাজার ৯৭০।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ বুলেটিন বা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিদিন কত আক্রান্ত বলা হলেও কোন বিভাগে মোট কত আক্রান্ত তা প্রকাশ করা হয় না। তবে তা প্রকাশ করা হয় আইইডিসিআরের ওয়েবসাইটে।
ওয়েবসাইটটির তথ্য মতে, দেশে মোট শনাক্ত দুই লাখ পাঁচ হাজার ৫৭৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে এক লাখ সাত হাজার ২৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৮ হাজার ৯২৪, সিলেট বিভাগে নয় হাজার ২৯৯, খুলনা বিভাগে ১৫ হাজার ৮১৮, ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচ হাজার ২৮১, রংপুর বিভাগে ছয় হাজার ৬৭২, বরিশাল বিভাগে ছয় হাজার ৭৬৯ এবং রাজশাহী বিভাগে ১৫ হাজার ৫৪৭ জন।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে রাজধানীতে ৭১ হাজার ৯৬ জন, ঢাকা জেলায় চার হাজার ১৪৮ জন, গাজীপুরে চার হাজার ৫২০ জন, কিশোরগঞ্জে দুই হাজার ১৮৭ জন, মাদারীপুরে এক হাজার ২৪৬ জন, মানিকগঞ্জে ৯৪৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ছয় হাজার ১৪৬ জন, মুন্সীগঞ্জে তিন হাজার ২৬৯ জন, নরসিংদীতে এক হাজার ৮২৫ জন, রাজবাড়ীতে দুই হাজার ১৩ জন, ফরিদপুরে পাঁচ হাজার ৩৫০ জন, টাঙ্গাইলে দুই হাজার ৯৭ জন, শরীয়তপুরে এক হাজার ৩৯৭ জন এবং গোপালগঞ্জে এক হাজার ৯৬৯ জন রয়েছেন।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৫ জন, কক্সবাজারে তিন হাজার ৭১৮ জন, কুমিল্লায় ছয় হাজার ২৩৭ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই হাজার ১২৯ জন, খাগড়াছড়িতে ৫৯৪ জন, লক্ষীপুরে এক হাজার ৭৫৩ জন, বান্দরবানে ৬৩১ জন, রাঙ্গামাটিতে ৭৪৯ জন, নোয়াখালীতে তিন হাজার ৯৬৭ জন, ফেনীতে এক হাজার ৫১৯ জন এবং চাঁদপুরে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার সাতজন।
সিলেট বিভাগের মধ্যে সিলেট জেলায় চার হাজার ৯৫৯ জন, সুনামগঞ্জে এক হাজার ৭৪৮ জন, হবিগঞ্জে এক হাজার ৩৭২ জন এবং মৌলভীবাজারে এক হাজার ২২০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
রংপুর বিভাগের মধ্যে রংপুর জেলায় এক হাজার ৭৩৬ জন, গাইবান্ধায় ৬৭১ জন, নীলফামারীতে ৭৫৮ জন, লালমনিরহাটে ৪১৯ জন, কুড়িগ্রামে ৫২৯ জন, দিনাজপুরে এক হাজার ৭৮৭ জন, পঞ্চগড়ে ৩৪৫ জন এবং ঠাকুরগাঁওয়ে ৪২৭ জন রোগী রয়েছেন।
খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা জেলায় পাঁচ হাজার ৭৯ জন, যশোরে দুই হাজার ৪১৩ জন, বাগেরহাটে ৭৮৭ জন, নড়াইলে এক হাজার ২৩ জন, মাগুরায় ৪৬৯ জন, মেহেরপুরে ৩৫৩ জন, সাতক্ষীরায় ৮৯১ জন, ঝিনাহদহে এক হাজার ৩৩৯ জন, কুষ্টিয়ায় দুই হাজার ২৬৭ জন এবং চুয়াডাঙ্গায় ৯৯৭ জন শনাক্ত হয়েছেন।
ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে ময়মনসিংহে তিন হাজার ৮৭ জন, জামালপুরে এক হাজার ১৭৫ জন, নেত্রকোণায় ৬৬৫ জন ও শেরপুরে ৩৭২ জন রয়েছেন।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরগুনায় ৭৫৮ জন, ভোলায় ৬০৬ জন, বরিশালে দুই হাজার ৮১৮ জন, পটুয়াখালীতে এক হাজার ১৮৩ জন, পিরোজপুরে ৮৫৬ জন, ঝালকাঠিতে ৫৪৮ জন এবং জয়পুরহাটে ৮৫৭ জন শনাক্ত হয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছেন চার হাজার ১৭ জন, পাবনায় ৮৯৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৮৮ জন, বগুড়ায় পাঁচ হাজার ৭৪২ জন, নাটোরে ৬৬৭ জন, নওগাঁয় এক হাজার ৫২ জন এবং সিরাজগঞ্জে শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৭২৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংখ্যার সঙ্গে আইইডিসিআরের প্রায় ৭১ হাজার জনের ব্যবধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জাগো নিউজকে জানান, তারা প্রতিটি রোগীর নাম, ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত নিখুঁতভাবে দেখে তবেই একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর তথ্য ওয়েবসাইটে সন্নিবেশিত করেন। অনেক সময় রোগীর দেয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করে পাওয়া যায় না। আবার অনেক সময় রোগীর নাম ডুপ্লিকেশন হয়, তাই নানা কারণে অধিদফতরের সঙ্গে তাদের পরিসংখ্যানের পার্থক্য দেখা যায়।
এমইউ/এইচএ/জেআইএম