ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

করোনা মিলল আরও ২৬৯৫ জনের দেহে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৩৫ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২০

দেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও দুই হাজার ৬৯৫ জনের মধ্যে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৮ জনের। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন হাজার ৮৩ জনে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক দৈনন্দিন বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। বুলেটিন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি পিসিআর-ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৬৬৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে ১২ হাজার ৯৩৭টি নমুনা। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৫টি। নতুন পরীক্ষায় করোনা মিলেছে দুই হাজার ৬৯৫ জনের মধ্যে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল দুই লাখ ৩৪ হাজার ৮৮৯ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৪৮ জন। ফলে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু হলো তিন হাজার ৮৩ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও দুই হাজার ৬৬৮ জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৩২ হাজার ৯৬০ জনে।

কোন বয়সী এবং কোন বিভাগে কতজনের মৃত্যু
মৃতদের বয়স বিভাজনের তথ্য তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের মধ্যে ৩১ থেকে ৪০ বছরের একজন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের চারজন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ১৪ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ১২ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের ১১ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের পাঁচজন এবং ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে একজন।

এ পর্যন্ত বয়স বিভাজন ভিত্তিতে মৃতের সংখ্যা ও শতকরা হার তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে শূন্য থেকে ১০ বছরের ১৮ জন, যার হার দশমিক ৫৮ শতাংশ; ১১ থেকে ২০ বছরের ৩০ জন, হার দশমিক ৯৭ শতাংশ; ২১ থেকে ৩০ বছরের ৮৫ জন, হার ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ; ৩১ থেকে ৪০ বছরের ২০২ জন, হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের ৪৩৫ জন, হার ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ; ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৮৯০ জন, হার ২৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের অধিক বয়সের ১ হাজার ৪২৩ জন ছিলেন, যার হার ৪৬ দশমিক ১৬ শতাংশ।

বিভাগভিত্তিক মৃতের সংখ্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ১২ জন, খুলনায় পাঁচজন, সিলেটে পাঁচজন, রাজশাহীতে তিনজন, বরিশাল, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে দুজন করে মৃত্যুবরণ করেছেন।

এ পর্যন্ত বিভাগভিত্তিক মৃতের সংখ্যা ও শতকরা হার তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৪৭৫ জন মারা গেছেন, যার হার ৪৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ; চট্টগ্রামে ৭৫১ জন, হার ২৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ; রাজশাহীতে ১৮২ জন, হার ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ; খুলনায় ২১৯ জন, হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ; বরিশালে ১০২ জন, হার ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ; সিলেটে ১৫১ জন, হার ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ; রংপুরে ১৭৭ জন, হার ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৭ জন মারা গেছেন, যার হার ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। 

গতকালের তথ্য
গতকাল বুধবারের (২৯ জুলাই) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ১৪ হাজার ১২৭টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা পাওয়া গেছে আরও তিন হাজার নয়জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্ত কমলেও লাফিয়ে বেড়েছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৬৪ জনের। সে তথ্য জানানো হয়, ৩০ জুনের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড চার হাজার ১৯ জনের, যা জানানো হয় ২ জুলাইয়ের বুলেটিনে।

শনাক্ত, সুস্থতা ও মৃত্যুর হার
বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ।

ভর্তি রোগী ও সেবা সরঞ্জামের তথ্য
২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪১ জন এবং বাড়িতে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে নাসিমা সুলতানা বলেন, ঢাকা মহানগরীতে সাধারণ শয্যায় ভর্তি আছেন দুই হাজার ৮৪ জন এবং আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছেন ১৯৩ জন। সারাদেশের অন্যান্য হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন এক হাজার ৫৩৭ জন এবং আইসিইউতে রোগী ভর্তি আছেন ১০৬ জন। সারাদেশে সবমিলিয়ে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ২৪০টি, রোগী ভর্তি আছেন তিন হাজার ৯৭১ জন, শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ২৬৯টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৫৪৯টি, রোগী ভর্তি আছেন ৩২৩ জন, শয্যা খালি আছে ২২৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৩৫২টি, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলার সংখ্যা ৩১৪টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটরের সংখ্যা ১৫৭টি।

আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন
আইসোলেশনে গত ২৪ ঘণ্টায় যুক্ত হয়েছেন ৬৩৫ জন, এই সময় ছাড়া পেয়েছেন ৭৩৬ জন। এ পর্যন্ত সর্বমোট আইসোলেশনে গেছেন ৪৯ হাজার ৯৫১ জন এবং ছাড় পেয়েছেন ৩১ হাজার ৩৮৩ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৫৬৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইনে যুক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪৫৩ জন এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে গেছেন চার লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন দুই হাজার ২৭২ জন এবং এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তিন লাখ ৭৬ হাজার ৯৭২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৫৭ হাজার ৪২৫ জন।

বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনা থেকে সুরক্ষিত ও সুস্থ থাকতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা।

বৈশ্বিক সর্বশেষ
গোটা বিশ্বকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে করোনাভাইরাস। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানো ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৭২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছয় লাখ ৭০ হাজারের বেশি। তবে সুস্থ রোগীর সংখ্যা এক কোটি সাত লাখ ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। আর এতে প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।

পিডি/এইচএ/এমকেএইচ