ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

এবার সর্বোচ্চ বাজেট ডিএসসিসিতে, বরাদ্দ কমবে মশকনিধনে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৩২ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২০

উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে গত অর্থবছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বাজেট বাড়িয়ে ছয় হাজার ১১৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। প্রতিষ্ঠার পর এটাই সর্বোচ্চ বাজেট সংস্থাটির। তবে বাজেট বাড়লেও গতবারের চেয়ে মশকনিধন কার্যক্রমে বরাদ্দ কমছে।

গত অর্থবছর (২০১৯-২০২০) তিন হাজার ৬৩১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিল ডিএসসিসি। পরে সংশোধিত বাজেট দাঁড়ায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। গত বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় এবারের প্রস্তাবিত বাজেট প্রায় দুই হাজার ৫০০ কোটি টাকা বেশি হতে যাচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম এ বাজেট প্রস্তুত করেছেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি করপোরেশনের দ্বিতীয় সভায় কাউন্সিলররা সম্মতি দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। যদিও এখনও বাজেট আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। সেখানে কিছুটা পরিবর্তনও হতে পারে।

জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৯টি খাতে নতুনভাবে কর ধার্য করতে যাচ্ছে ডিএসসিসি। সিটি করপোরেশন আইনে এ থেকে ৯৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার নিবন্ধীকরণ ফি; প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিকেল ইনস্টিটিউট, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধীকরণ ফি; করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত হোটেলের ওপর নগর কর, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে নিযুক্ত প্রাইমারি কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার নিবন্ধন ও বার্ষিক ফি; ইউটিলিটি সার্ভিস প্রদানে রাস্তা ব্যবহারের ফি, রিকশা লাইসেন্স ফি, ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য আবেদনের ওপর কর; নগরীতে ভোগ, ব্যবহার বা বিক্রয়ের জন্য পণ্য আমদানির ওপর কর; নগর থেকে পণ্য রফতানির ওপর কর, টোলজাতীয় কর, পেশা বা বৃত্তির ওপর কর, জনসেবামূলক কার্যসম্পাদনের ওপর কর, সরকার কর্তৃক আরোপিত করের ওপর কর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ট্রেনিং সেন্টার প্রভৃতির ওপর কর; মেলা, কৃষি প্রদর্শনী, শিল্প প্রদর্শনী, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও অন্যান্য জনসমাবেশের ওপর কর; বিবাহ, তালাক, দত্তক গ্রহণ ও জিয়াফত বা ভোজের ওপর কর; পশুর ওপর কর, বাজারের ওপর ফি (ইজারা) এবং অন্যান্য খাতকে নতুন করে করের আওতায় আনা হচ্ছে।

মশকনিধনে বরাদ্দ কমাচ্ছে ডিএসসিসি

২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় আট কোটি টাকা কমিয়ে ৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে। যেখানে গত অর্থবছরে ৪৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে রাখা হয় ২৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

এদিকে গত ১ জুলাই থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে মশকনিধনে কার্যক্রম চালু করেছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে জমির পরিমাণ ও ভবনের উচ্চতার ভিত্তিতে ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়। আবেদনের তিন দিনের মধ্যে এই সেবা পাওয়া যাবে। কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে মশা মারার কার্যক্রমে আশানুরূপ কোনো সাড়া পায়নি করপোরেশন।

ডিএসসিসির এই কার্যক্রম বিষয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, মানুষের বাসাবাড়িতে মশার লার্ভা কিংবা মশার বিস্তারক্ষেত্র থাকলে আমাদের মোবাইল কোর্ট যে জরিমানা করে, তার চাইতেও অনেক কম মূল্যে, বলা যায় নামমাত্র মূল্যে আমরা ঢাকাবাসীকে এ সেবা প্রদান করব।

ডিএসসিসির আওতাধীন একজন সেবাগ্রহীতা নিজ বাসা বা স্থাপনায় জমে থাকা মশার লার্ভা বিনষ্ট করতে এই সেবা নিতে পারবেন। সেবা পেতে সেবাগ্রহীতাকে করপোরেশনের ওয়েবপোর্টালের (www.dscc.gov.bd) নির্দিষ্ট লিংকের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে সেবা গ্রহণ করা যাবে এবং সেবাগ্রহীতাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ সেবামূল্য হিসেবে প্রদান করতে হবে। আবেদনের পর তিন কার্যদিবসের মধ্যে এই সেবা প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

স্থাপনার ক্যাটাগরি ও সেবার হার বিষয়ে জানা গেছে, তিন কাঠা পর্যন্ত এক ইউনিট বাড়ি (৫ তলা পর্যন্ত) ২ হাজার টাকা। ৩-৫ কাঠা পর্যন্ত ফ্ল্যাট বাড়ি (প্রতি ফ্লোর) ২ হাজার ৫০০ টাকা। ৫-১০ কাঠা পর্যন্ত অ্যাপার্টমেন্ট ১০ তলা পর্যন্ত (প্রতি ফ্লোর) ৩ হাজার ৫০০ টাকা। অ্যাপার্টমেন্ট ১০ তলার ওপরে বেজমেন্টসহ ৫ হাজার টাকা। বাণিজ্যিক ভবন ৮ হাজার টাকা।

মশকনিধন সিটি করপোরেশনের প্রধান কাজের একটি হওয়ায়, এক্ষেত্রে টাকা খরচ করে নাগরিককে কেন এই সেবা নিতে হবে? সে বিষয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসসিসির এক কর্মকর্তা বলেন, এটা আমাদের একটি বিশেষ উদ্যোগ। আমাদের রুটিন কাজের পাশাপাশি কেউ যদি এ সেবাটা নিতে চায় তার জন্য সেবাটি রাখা হয়েছে। তবে এখনও আশানুরূপ সাড়া আমার পাইনি।

এএস/বিএ/এমকেএইচ