ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ঢাকা উত্তরে বসবে ৬টি পশুর হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৩৭ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২০

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ছয়টি পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে একটি স্থায়ী এবং বাকি পাঁচটি অস্থায়ী। স্থায়ী হাটটি বসবে গাবতলীতে।

অস্থায়ী পাঁচটি হাট হচ্ছে- উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গা, কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনি বাজারমুখী রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা, ভাটারা (সাঈদনগর) পশুর হাট এবং উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা। ডিএনসিসির সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা এ এস এম মামুন।

এছাড়া করোনার গণসংক্রমণ রোধে ই-কমার্স অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সহায়তায় অনলাইনে পশু কিনে অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানি, মাংস প্রক্রিয়াকরণ এবং বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

দরপত্র আহ্বানের পরও জনস্বার্থে ছয়টি হাটের ইজারা বাতিল করা হয়। ইজারা বাতিল হাটগুলো হচ্ছে- বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাবনগর), ভাষানটেক রাস্তার অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অংশ ও পাশের খালি জায়গা, উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম অংশ এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের খেলার মাঠ, মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা এবং মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন বছিলা হাট।

হাট ইজারা গ্রহীতাদের যেসব শর্ত মানতে হবে

পশুর হাট ঈদের দিনসহ মোট পাঁচদিন চালু থাকবে। নির্ধারিত তারিখের বেশি দিন হাট পরিচালনা করা যাবে না। কোরবানির পশুর হাটের নির্ধারিত সীমানা বহাল থাকবে। সীমানার বাইরে কোনো হাট বসানো যাবে না। ইজারা গ্রহীতা নিজ ব্যবস্থাপনায় হাটের চৌহদ্দি সংরক্ষণপূর্বক চৌহদ্দির বাইরে যাতে পশুর হাট প্রসারিত না হয় তা নিশ্চিত করবে। পশুর বিক্রয় মূল্যের উপর সরকার অনুমোদিত শতকরা পাঁচ টাকা হারে হাসিল আদায় করতে হবে। ইজারা গ্রহীতা নিজ খরচে বাজারে দৃশ্যমান একাধিক স্থানে সর্বসাধারণের অবগতির জন্য চার্ট প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় ইজারা বাতিল বলে ঘোষণা করলে ইজারা গ্রহীতা তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবে। হাটে পশু বেঁধে রাখা বা অন্য কোনো কাজে রাস্তার ইলেকট্রিক পিলার ব্যবহার করা যাবে না। হাটের যে কোনো দুর্ঘটনার জন্য ইজারা গ্রহীতা দায়ী থাকবে। ইজারা গ্রহীতা নিজ দায়িত্বে বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ এবং সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে। এ বিষয়ে ইজারা গ্রহীতা ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। হাটে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হবে। বৈধ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত লোক দ্বারা বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করতে হবে। ইজারা গ্রহীতা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দফতরে যোগাযোগ করে হাট চলাকালীন সময়ে হাট এলাকায় নিজ খরচে পুলিশ-আনসার মোতায়েনের ব্যবস্থা নেবে। এছাড়া হাটের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব কর্মী নিযুক্ত করবে। হাটের মধ্যে যত্রতত্র ময়লা আর্বজনা ফেলে রাখা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আর্বজনা রাখতে হবে।

রাস্তার বা অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষতি করলে জামানত বাজেয়াপ্তকরণসহ আইনানুগ ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হবে এবং ইজারা গ্রহীতা তা পরিশোধে বাধ্য থাকবে। ইজারা গ্রহীতা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখবেন। ইজারা গ্রহীতা জোরপূর্বক কোনো পশুকে হাটে প্রবেশ করানো এবং হাটের আশপাশের সড়কপথ বা জলপথ দিয়ে গমনকারী কোনো পশুর উপর জোর পূর্বক কোনো হাসিল আদায় করতে পারবে না। বর্ণিত হাটের সুবিধাজনক স্থানে ডিএনসিসির ভিজিলেন্স টিমের জন্য একটি এবং আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সদস্যদের জন্য একটিসহ মোট দুটি অস্থায়ী শেড নির্মাণ করবে। রাস্তায় যান ও জন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে কোনো জায়গায় গবাদি পশু ট্রাক হতে লোড-আনলোড করা যাবে না। হাটের মধ্যে পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণপূর্বক পশু নামানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ইজারা গ্রহীতাকে নিজ ব্যবস্থাপনায় হাটের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। পশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য হাটের সুবিধাজনক স্থানে একটি ওয়াচ টাওয়ার বসানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইজারা গ্রহীতাকে হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন করতে হবে। অস্থায়ী টয়লেটের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সাবান রাখতে হবে। হাট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইজারাদারের নিজ দায়িত্বে হাটের বাঁশ- খুঁটি অপসারণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অপসারণ খরচ তার জামানত হতে কর্তন করা হবে।

করোনা রোধে অস্থায়ী পশুর হাটে বাধ্যতামূলকভাবে ইজারা গ্রহীতাকে যেসব ব্যবস্থা নিতে হবে

হাটের প্রবেশ পথে টিভি স্ক্রিনযুক্ত থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে প্রবেশকারীর শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে হবে। গায়ে জ্বর থাকলে কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। হাটে প্রত্যেক প্রবেশকারীকে হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, হেড ক্যাপ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, হ্যান্ডগ্লাভস, মাস্ক ও হেড কভার ব্যবহার নিশ্চিত এবং এ কাজ তদারকির জন্য মনিটারিং টিম রাখতে হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার টানানোসহ এসব বিষয়ে মাইকে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে হবে। জীবাণুনাশক দিয়ে হাটের সর্বত্র ও আশপাশের সংশ্লিষ্ট জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাবান, পানির ড্রাম ও বেসিন রাখতে হবে। (বেসিন স্থাপনের ডিজাইন পূর্বেই ডিএনসিসি বরাবর জমা দিয়ে তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে)।

হাটে প্রবেশ এবং বাহিরের জন্য পৃথক পৃথক গেট করতে হবে এবং নির্ধারিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রবেশ-বাহির হতে হবে। একাধিক প্রবেশ পথ হলে প্রত্যেক প্রবেশ পথেই টিভি স্ক্রিনযুক্ত থার্মাল স্ক্যানার বসাতে হবে। বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের নিমিত্তে করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো স্ক্রিনে সার্বক্ষণিকভাবে দেখাতে হবে। পশু ক্রয়কারী সঙ্গে করে অনেক লোক নিয়ে হাটে আসতে পারবে না এবং ক্রেতাকে নির্ধারিত দূরত্ব থেকে পশু দেখতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয়ে উৎসাহিত করতে হবে। হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন স্থাপন করতে হবে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত মেডিকেল বর্জ্য যেমন- গ্লাভস, মাস্ক, হেড কভার, স্যানিটাইজার বোতল রাখার জন্য পৃথক ডাস্টবিন রাখতে হবে, ডাস্টবিনসমূহ কোথায় তা তীর চিহ্নিত স্টিকার দিয়ে দেখাতে হবে। সর্বোপরি স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার, স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিটি করপোরেশন কর্তৃক যদি আরও কোনো শর্ত, বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয় তবে ইজারাদারকে তা আবশ্যিকভাবে পালন করতে হবে। করোনা রোধ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ এবং সিটি করপোরেশন আইন-২০০৯ ও তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য আইন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এএস/এএইচ/এমকেএইচ