৭৪ এ যাত্রা, গড়েছেন ৪১ শিল্পপ্রতিষ্ঠান
অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বাবুল দেশ গঠনের স্বপ্ন নিয়ে গড়ে তোলেন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ১৯৭৪ সালে বেসরকরি খাতে গড়ে তোলেন যমুনা ইলেকট্রনিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড। যাত্রার শুরুতে বেশ চড়াই-উতরাই পার হলেও পেছনে তাকাননি এ স্বপ্নদ্রষ্টা। লক্ষ্য অর্জনে সাহসী সিদ্ধান্ত, উদ্যমী মনোভাব আর কঠোর পরিশ্রমে উঠেছেন সাফল্যের চূড়ায়। ৪৬ বছরে গড়ে তুলেছেন ৪১টি শিল্প প্রতিষ্ঠান। যেখানে হয়েছে অর্ধলক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান।
দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প পরিবার যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং দৈনিক যুগান্তর, যমুনা টিভি ও যমুনা ফিউচার পার্কের মালিক নুরুল ইসলামের পথচলা শুরু হয়েছিল বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ উৎপাদন দিয়ে। পরবর্তীকালে তার প্রতিষ্ঠত যমুনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ একটি জায়ান্ট গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। চার দশকে তিনি জাতীয় অর্থনীতিতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।
দেশের অন্যতম এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বাবুল আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
সোমবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন এই বরেণ্য শিল্পপতি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
দেশ বরেণ্য এই ব্যবসায়ীর টেক্সটাইল থেকে শুরু করে আবাসনসহ রয়েছে বিচিত্র ব্যবসায়িক ক্ষেত্র। বৈদ্যুতিক, ইঞ্জিনিয়ারিং, রাসায়নিক, চামড়া, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলসহ স্পিনিং, বুনন ও রঞ্জন, কসমেটিকস, বেভারেজ, আবাসন, হাউসিং, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া খাতে অর্থ লগ্নি করেছে এ শিল্প গ্রুপটি। স্থানীয় ও বৈশ্বিক- উভয় বাজারে যমুনা গ্রুপের পণ্যের সুনাম রয়েছে। জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ভারত, ইতালি থেকে প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে বৈশ্বিক বাজারে সেরা কোয়ালিটির পণ্য উৎপাদন করে ‘টেক্সটাইলের নতুন বিশ্ব’ গড়ে তুলেছে যমুনা গ্রুপ।
উৎপাদন শিল্প থেকে শুরু করে মিডিয়া খাত বৈচিত্র্যময় ব্যবসায়িক ক্ষেত্র যমুনা গ্রুপের। গ্রুপের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভি।
যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের যেসব প্রতিষ্ঠান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে
২০০০-২০০১ সালে শামীম কম্পোজিট মিলস লিমিটেড জাতীয় রফতানি স্বর্ণপদক, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে শামীম স্পিনিং মিলস লিমিটেড জাতীয় রফতানি রৌপ্যপদক, ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড জাতীয় রফতানি ব্রোঞ্জপদক লাভ করে। এছাড়া ১৯৯৮-১৯৯৯ স্ক্যান সিমেন্টের (হাইডেলবার্গ সিমেন্ট গ্রুপ) ‘বেটার বিল্ডিং বেটার উইনিং কম্পিটিশন ২০০২ জিতে নেয় যমুনা বিল্ডার্স লিডিটেড। একই বছর জার্মানির মাইলস হ্যান্ডেল গিসেলশ্যাপ্ট ইন্টারন্যাশনাল এমবিএইচ অ্যান্ড কোম্পানি পুরস্কার লাভ করে যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড।
যমুনা গ্রুপের যত প্রতিষ্ঠান
১. যুগান্তর, একটি স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক ২. যমুনা ফিউচার পার্ক, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শপিংমল ৩. যমুনা টিভি ৪. যমুনা হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড ৫. ক্রাউন বেভারেজ লিমিটেড ৬. যমুনা নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড ৭. যমুনা ডেনিমস লিমিটেড ৮. যমুনা স্পিনিং মিলস লিমিটেড ৯. শামীম স্পিনিং মিলস লিমিটেড ১০. শামীম কম্পোজিট মিলস লিমিটেড ১১. শামীম রোটোর স্পিনিং লিমিটেড ১২. শামীম গার্মেন্টস ১৩. যমুনা ডেনিমস গার্মেন্টস ১৪. যমুনা ডেনিমস ওয়েভিং লিমিটেড ১৫. প্যাগাসাস লেদারস লিমিটেড ১৬. যমুনা ডিস্ট্রিলারি লিমিটেড ১৭. যমুনা ওয়েল্ডিং ইলেক্ট্রোড লিমিটেড ১৮. যমুনা ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড অটোমোবাইলস ১৯. যমুনা টায়ার অ্যান্ড রাবারস ইন্ডাস্ট্রিজ ২০. যমুনা পেপারস মিলস ২১. যমুনা আয়রন অ্যান্ড স্টিল মিলস লিমিটেড ২২. যমুনা গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ ২৩. যমুনা পাওয়ার লিমিটেড ২৪. যমুনা প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিশিং লিমিটেড ২৫. যমুনা ফ্যান অ্যান্ড ক্যাবলস লিমিটেড ২৫. যমুনা পলি সিল্ক লিমিটেড ২৬. যমুনা লজিস্টিক অ্যান্ড শিপিং লিমিটেড ২৭. যমুনা বিল্ডার্স লিমিটেড ২৮. যমুনা গ্যাস লিমিটেড ২৯. হোলসেল ক্লাব লিমিটেড ৩০. যমুনা ওয়াশিং ৩১. হুরিয়ান এইচটিএফ লিমিটেড ৩২. যমুনা মিডিয়া লিমিটেড ৩৩. লন প্রসেসিং লিমিটেড ৩৪. যমুনা ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাচারিং ৩৫. যমুনা ফুডস লিমিটেড ৩৬. হোরক্যাচার লিমিটেড ৩৭. যমুনা ব্রেয়ারি অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড ৩৮. যমুনা ডেনিমস টেকনোলজি লিমিটেড।
এসআই/এমএফ/পিআর