ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক
জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে করোনার ভুয়া রিপোর্ট তৈরি এবং সরবরাহ করে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক জানায়, সরকারি চাকরিতে (চিকিৎসক, সার্জারি বিভাগ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট) বহাল থেকে স্বামী আরিফ চৌধুরীর সহায়তায় প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহপূর্বক ১৫ হাজার ৪৬০টি ভুয়া রিপোর্ট তৈরি ও সরবরাহ করে আট কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
এর আগে কমিশনের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগ বিভিন্ন ব্যক্তি, গণমাধ্যম, ভার্চুয়াল মাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো সংগ্রহ করে। কমিশনের দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেল কমিশনে এসব অভিযোগ উপস্থাপন করা হলে কমিশন এ সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশনের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের মাধ্যমে এই অভিযোগটি অনুসন্ধান করা হবে।
এদিকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই রিপোর্ট ডেলিভারি দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতার জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফকে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে চারদিনের রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ডা. সাবরিনাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়। রোববার (১২ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত এক অফিস আদেশ জারি করা হয়।
কে এই ডা. সাবরিনা
ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। পুলিশ বলছে, সাবরিনা জেকেজির চেয়ারম্যান। তবে সাবরিনা নিজেকে জেকেজির ‘চেয়ারম্যান নয়’ বরং প্রতিষ্ঠানটির ‘কোভিড-১৯ বিষয়ক পরামর্শক’ দাবি করেছেন।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সাবরিনা আরিফের চতুর্থ স্ত্রী। তার প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী রাশিয়া ও লন্ডনে থাকেন। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তালাক হয়েছে তার। চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনার কারণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার। প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকার অন্য এলাকা এবং অনেক জেলা থেকেও নমুনা সংগ্রহ করছিলেন তারা।
সূত্র আরও জানায়, ঢাকা, নায়ায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল সাবরিনা-আরিফ দম্পতির জেকেজি প্রতিষ্ঠান। নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ দেয়া ছিল। তাদের হটলাইন নম্বরে রোগীরা ফোন দিলে মাঠকর্মীরা বাড়ি গিয়েও নমুনা সংগ্রহ করতেন। আবার অনেককে জেকেজির বুথের ঠিকানা দেয়া হতো। এভাবে কর্মীরা প্রতিদিন গড়ে ৫০০ মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতো।
পরে তাদের গুলশানের একটি ভবনের ১৫ তলার অফিসের একটি ল্যাপটপ থেকে ভুয়া সনদ দিত। ওই ল্যাপটপ থেকে জেকেজির কর্মীরা রাতদিন শুধু জাল রিপোর্ট তৈরির কাজ করতো। প্রতিটা সনদের জন্য নেয়া হতো পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিদেশিদের কাছ থেকে নেয়া হতো ১০০ ডলার। যদিও শর্ত ছিল বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত ল্যাবে পাঠাতে হবে। কিন্তু তারা সব ধরনের শর্তভঙ্গ করে পরীক্ষা ছাড়াই রিপোর্ট দিত।
এমইউ/বিএ/এমএস
টাইমলাইন
- ০২:০৭ পিএম, ২০ জুলাই ২০২০ কারাগারে ডা. সাবরিনা
- ০৬:০৬ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২০ অধিদফতরে প্রভাব খাটিয়ে আরিফকে কাজ পাইয়ে দিতেন সাবরিনা
- ০২:০৬ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২০ সাবরিনা আবারও রিমান্ডে
- ০১:১০ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২০ সাবরিনার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়েছে ডিবি
- ১২:৫৪ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২০ আদালতের হাজতে রাখা হয়েছে ডা. সাবরিনাকে
- ১২:১৩ পিএম, ১৭ জুলাই ২০২০ সাবরিনাকে নেয়া হচ্ছে আদালতে, চাওয়া হবে আবারও রিমান্ড
- ১১:৩২ এএম, ১৪ জুলাই ২০২০ ডিবি কার্যালয়ে সাবরিনা
- ০৭:৪৬ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২০ ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক
- ১২:০৯ পিএম, ১৩ জুলাই ২০২০ ৩ দিনের রিমান্ডে ডা. সাবরিনা
- ০৬:৩০ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ ডা. সাবরিনা বরখাস্ত
- ০৬:০৯ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ কে এই সাবরিনা, জিজ্ঞাসাবাদে যেখানে আটকে যান তিনি
- ০৪:৪৭ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনার উত্তর সন্তোষজনক ছিল না, তাই গ্রেফতার
- ০৩:২৬ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ জেকেজির ডা. সাবরিনা গ্রেফতার
- ০২:৫০ পিএম, ১২ জুলাই ২০২০ জেকেজির ডা. সাবরিনা পুলিশ হেফাজতে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে