করোনার নমুনা টেস্ট না করেই রিপোর্ট দিতো রিজেন্ট হাসপাতাল
রোগীদের কাছ থেকে করোনার নমুনা নিয়ে সেগুলো টেস্ট না করেই মনগড়া রিপোর্ট দিত রিজেন্ট হাসপাতাল। হাসপাতালটির ল্যাবে গিয়ে এই চিত্র দেখতে পেয়েছে র্যাব।
সোমবার বিকেলে রিজেন্টের উত্তরার শাখায় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এসব অনিয়ম ধরা পড়ে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম।
অভিযানে গিয়ে র্যাব দেখতে পায়, করোনা টেস্ট না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিত রিজেন্টের উত্তরা শাখা। অভিযানে অসংখ্য ভুয়া করোনা রিপোর্টসহ নানা নথি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিলসহ নানা অভিযোগ জমা পড়েছে যার সত্যতাও মিলেছে।
অভিযানের বিষয়ে সারোয়ার আলম বলেন, কয়েক দিন ধরে আমরা অনেক অভিযোগ পাচ্ছিলাম তাদের বিরুদ্ধে। আমরা এখানে এসে দেখেছি তারা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করেছে। সংগৃহীত অসংখ্য নমুনার মধ্যে তারা মাত্র ৪২০০ এর মতো নমুনা পরীক্ষা করেছে। এর চেয়ে দ্বিগুণ নমুনা পরীক্ষা না করেই করোনা ‘নেগেটিভ-পজিটিভ’ রিপোর্ট দিয়েছে। আমরা এখানে ২৬ জনের নমুনা পেয়েছি, যেগুলো পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে রিজেন্ট।
তিনি বলেন, হাসপাতাল ভবনের পাশের ভবনের রিজেন্টের আইটি শাখা। সেখানেই নমুনা সংগ্রহের ভুয়া আইডি তৈরি করে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করানো হয়। এভাবে তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
রিজেন্টে গিয়ে ধরা পড়লো যেসব অনিয়ম
মনগড়া রিপোর্ট তৈরি ছাড়াও অভিযানে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে র্যাব। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদফতর তাদের কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করে।
হাসপাতালটিকে ইন-হাউজ রোগীদের কোভিড টেস্ট ও চিকিৎসা দেয়ার অনুমতি দেয়া হলেও তারা দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করছিল। উদ্ধার করা ভুয়া রিপোর্টের অধিকাংশ নমুনাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এছাড়া হাসপাতালটি ২০১৪ সালের পর তাদের লাইসেন্স আর নবায়ন করেনি। করোনার পরীক্ষা বিনামূল্যে করার কথা থাকলেও রোগীদের কাছ থেকে ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আদায় করতো বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
র্যাব হেফাজতে ৮ জন
এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে কাউকে গ্রেফতার না দেখানো হলেও হাসপাতালের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হেফাজতে নিয়েছে (আটক) র্যাব। প্রাথমিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
তারা দাবি করেছেন, ভুয়া রিপোর্টের বিষয়ে কিছুই জানতেন না তারা।
অভিযান চলাকালে র্যাব হাসপাতালের চেয়ারম্যানকে উপস্থিত হতে বললেও তিনি উপস্থিত হননি। রাত ৮টা পর্যন্ত অভিযান চলছিল।
এদিকে বিকেলে একদিকে যখন রিজেন্টের উত্তরায় অভিযান চলছিল, অন্যদিকে রিজেন্টের মিরপুরের শাখা ঘিরে রাখে র্যাব। সেখানেও শুরু হয় অভিযান।
এআর/এসএইচএস/জেআইএম