সীমান্তে হত্যা বন্ধে ‘চাপ প্রয়োগে’ ঘাটতি আছে সরকারের
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে চাপ প্রয়োগে বাংলাদেশ সরকারের দুর্বলতা না থাকলেও ঘাটতি আছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক কূটনীতিক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেছেন, আমরা সেই অর্থে চাপ প্রয়োগ করতে পারিনি, যার দরুণ ভারতীয়দের মধ্যে এমন হত্যাকাণ্ড নিয়ে তেমন প্রতিবাদ হচ্ছে না।
সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়ায় জাগো নিউজের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন। ড. ইমতিয়াজ বলেন, বাংলাদেশ সীমানায় মানুষ হত্যার ঘটনা একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু এবং পরম্পরায় ঘটে যাচ্ছে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা যে ভারতীয়দের মধ্যে এমন হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ নেই, প্রতিরোধ নেই। ভারতীয় সুশীলদের মধ্যেও বাংলাদেশিদের হত্যা নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। এটি আমাকে অবাক করে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়ার কথা। আমরা দোষী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি হতে দেখিনি। এই বিচারহীনতা সীমান্তে হত্যাকাণ্ডে আরও উৎসাহ জোগাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও যথাযথ চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। এটি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পর্কের একটি প্রধান সমস্যা। এ নিয়ে উদ্বেগ সর্বত্রই। কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যে অভিযোগে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হয়, তা ঠুনকো এবং চাইলেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। হয়তো বাংলাদেশ সীমানায় এমন বিএসএফ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে, যারা কাশ্মীর- পাকিস্তান সীমানায় দায়িত্ব পালন করেছে এবং যাদের হাতের আঙুল বন্দুকের ট্রিগারে। অথচ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঠিক এমন না।
লাদাখের ঘটনা এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন মাত্রায় ফাটল ধরাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বৃদ্ধি বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ চাপ কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইমতিয়াজ বলেন, এমনটি হলে চরম হাস্যকর। ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘খয়রাতি’ বলে ট্রিট করেছে। এটি দুঃখজনক। হত্যাকাণ্ড বা বিশেষ প্রক্রিয়ায় চাপ প্রয়োগ করে সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায় না। এতে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাবে। এটা ভারতকে বুঝতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভারতকে আমাদের পাশে থাকা দরকার। কিন্ত ভারতের স্বার্থেই বাংলাদেশকে বেশি দরকার। এটি ভারতের নাগরিক সমাজকেও বুঝতে হবে৷ জোর করে সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায় না।
এএসএস/এমএসএইচ