ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

কোরাম সংকটে ব্যয় হয়েছে ৩২ কোটি টাকা : টিআইবি

প্রকাশিত: ১১:০০ এএম, ২৫ অক্টোবর ২০১৫

দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় থেকে ৬ষ্ঠ অধিবেশনে কোরাম সংকটে ব্যয় অপচয় হয়েছে ৩২ কোটি ৪২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। এসময় গড়ে মোট ২৬ মিনিট কোরাম সংকট হয়েছে। আর মোট সংকট হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা ৪১ মিনিট।
 
রোববার দশম জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশনের কার্যক্রম ওপর টিআইবি’র পর্যাবেক্ষণ ও বিশ্লেষণভিত্তিক গবেষণা প্রতিবেদন ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য তুলে ধরা হয়। সংস্থার ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন টিআইবি’র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজেটি, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফাতেমা আফরোজ এবং মোরশেদা আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে জুন ২০১৪ - আগস্ট ২০১৫ পর্যন্ত (দশম সংসদের দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ অধিবেশন) পরিমাণবাচক এবং গুণবাচক তথ্য সংগৃহীত হয়। প্রত্যক্ষ তথ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে সংসদ টেলিভিশন চ্যানেলে সরাসরি প্রচারিত সংসদ কার্যক্রম এবং টিআইবি’র গবেষণা দলের সদস্য কর্তৃক অধিবেশন সরাসরি পর্যবেক্ষণ।

এছাড়া পরোক্ষ তথ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয় সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত বুলেটিন ও কমিটি প্রতিবেদন, সরকারি গেজেট, প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন, বই ও প্রবন্ধ ও সংবাদপত্রের তথ্য ইত্যাদি।  

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দশম সংসদের ২য়-৬ষ্ঠ অধিবেশনে দৈনিক গড়ে ২৬ মিনিট হিসেবে মোট কোরাম সংকট হয়েছে ৪৮ ঘণ্টা ৪১ মিনিট যার অনুমিত অর্থমূল্য প্রায় ৩২ কোটি ৪২ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। অধিবেশনে আইন প্রণয়নে মোট অধিবেশনের সময়ের মাত্র ৬ শতাংশ ব্যয়িত হয়েছে। বিভিন্ন বিলে সংসদ সদস্য কর্তৃক জনমত যাচাই বাছাইয়ের প্রস্তাব থাকলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধনী) আইন, ২০১৪’ পাসের ক্ষেত্রে প্রধান বিরোধী দল এবং অন্যান্য বিরোধী সদস্যরা জনমত যাচাই-বাছাই এর নোটিশ দিলেও বিভক্তি ভোটের সময় নিজেদের নোটিশের বিপক্ষে ভোট দেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব ও জবাবদিহিতা কার্যক্রমের আওতায় কার্যপ্রণালী বিধি ৭১-ক বিধিতে মোট ৪৩৯টি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের উপর আলোচনা করা হয়। ৭১ বিধিতে ৮২টি নোটিশ গৃহীত হয় (৫৫টি সরকারি দলের, ১৮টি প্রধান বিরোধীদলের এবং ৯টি অন্যান্য বিরোধী সদস্যের)।

গবেষণার সার্বিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সরকারিদল ও বিরোধীদল উভয় পক্ষের আলোচনায় ও বক্তব্যে সংসদের বাইরের রাজনৈতিক জোট নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক সমালোচনা ও অশালীন ভাষার প্রাধান্য, অসংসদীয় আচরণ ও ভাষার ব্যবহার বন্ধে স্পিকারের শক্তিশালী ভূমিকার অনুপস্থিতি, আইন প্রণয়ন, প্রশ্নোত্তর ও জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের আলোচনা পর্বে সদস্যদের কম অংশগ্রহণ, কমিটি সদস্যের কমিটি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সংশ্লিষ্টতা, বিধি অনুযায়ী সভা নিয়মিত না হওয়া, তথ্যের উন্মুক্ততা ও অভিগম্যতার ঘাটতি এবং নারী সদস্যদের তুলনামূলক কম অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বর্তমান সংসদ ক্ষমতাসীন দলের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের ভূবনে পরিণত হয়েছে। আইন প্রণয়নে মোট কার্যদিবসের মাত্র ৬ শতাংশ সময় ব্যয়িত হয়েছে, যেখানে মাত্র ২৮ জন সাংসদ আইন প্রণয়ণ সংক্রান্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমান সংসদ সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রাতিষ্ঠানিক ফোরামে পরিণত হয়েছে, অন্যদিকে কথিত বিরোধী দলের লেজুড়বৃত্তির সংস্কৃতি প্রকট আকার ধারণ করেছে।

এসএ/এসএইচএস/আরআইপি