নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে সেনাটহল জোরদার
দলবেঁধে দ্রুতবেগে হেঁটে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। রীতিমতো কে কার আগে হেঁটে সামনে যাবেন- এমন প্রতিযোগিতা করে হাঁটছেন সবাই। কারও হাতে ব্যাগ, কারও হাতে টিফিন ক্যারিয়ার আবার কারও হাতে ছোট-বড় বাক্স। কেউবা আবার খালি হাতেই হেঁটে যাচ্ছেন। দ্রুত পায়ে হেঁটে যাওয়ার পাশাপাশি সবাই ব্যস্ত মুখে মাস্ক ঠিকমতো পরতে। আশপাশের মানুষ হতবাক হয়ে দলবেঁধে মানুষের ছুটে চলার দৃশ্য দেখে বোঝার চেষ্টা করছেন কী কারণে তারা দ্রুত পায়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
রোববার (২৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর নিউ মার্কেটের অদূরে আজিমপুর পুরাতন কবরস্থান থেকে বিজিবি ৩ নম্বর গেট পর্যন্ত রাস্তায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কৌতূহলবশত একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে এ প্রতিবেদক দেখতে পান, সেনাবাহিনীর জনাদশেক সদস্য সকলকে হ্যান্ডমাইকযোগে মুখে মাস্ক পরিধান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত মার্কেট থেকে বাড়ি ফেরার তাগিদ দিচ্ছেন। অদূরেই সেনাবাহিনীর দুটি গাড়িকে টহল দিতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর তৎপরতা দেখে ফুটপাতের হকাররাও ভয়ে ভ্যান নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। মিনিট পাঁচেক পর টহলরত গাড়ি চলে যেতেই আবার লোকজন আগের মতোই খোশগল্প শুরু করেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের পাশাপাশি প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার (মুখ মাস্ক, শারীরিক দূরত্ব বজায় চলা ও ঘন ঘন সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধৌত করা) অনুরোধ জানালেও অধিকাংশ মানুষই তা মানছেন না। মুখে মাস্ক পরলেও তা সঠিক নিয়ম মেনে পরছেন না কিংবা খুলে রাখছেন অথবা নাক-মুখের নিচে নামিয়ে রাখছেন।
রোববার রাজধানীর লালবাগ, ধানমন্ডি ও নিউ মার্কেট এলাকায় সেনাবাহিনীকে টহল দিতে দেখা যায়। বিভিন্ন মার্কেট বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করাসহ জনসাধারণ সঠিকভাবে মুখে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কিনা তা দেখে তাদের সচেতন করতে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা আজমত আলী এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, করোনা সংক্রমণরোধে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সেনাসদস্যের বিকল্প নেই। বারবার বলার পরও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। ফলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর এমন টহল থাকলে নগরবাসী বিধি মানতে বাধ্য হবে।
লালবাগের বাসিন্দা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাজু আহমেদ বলেন, বেলা ১২টার দিকে আজিমপুর দিয়ে হেঁটে আসার সেনাসদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। তারা রিকশাচালকদের মাস্ক সরবরাহ করছিলেন এবং যাদের মুখে মাস্ক ছিল না তাদের কাছে কৈফিয়ত চাইছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেনাটহল আরও জোরদার করা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এমইউ/বিএ/জেআইএম