দুই কোটি টাকার ভেজাল হ্যান্ডরাব জব্দ: চারজনের জেল-জরিমানা
সুন্দর প্যাকেজিং করা হ্যান্ডরাব। কিন্তু আদতে এতে জীবাণুমুক্ত করার কোনো উপকরণ নেই। এই হ্যান্ডরাবের নেই ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদনও। তবুও গত সপ্তাহে বাজারে বিক্রি হয়েছে দুই লাখেরও বেশি বিক্রি হয়েছে কাজী ম্যানুফ্যাকচার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি অননুমোদিত এই হ্যান্ডরাব।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে উত্তর রায়েরবাগ দোতলা মসজিদ এলাকার একটি ফ্ল্যাটের বেজমেন্টে নকল হ্যান্ডরাব তৈরির কারখানার সন্ধান পায় পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সেখানে অভিযানকালে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনহীন এক লাখেরও বেশি পিস হ্যান্ডরাবসহ জব্দ করে র্যাব পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেকের উপস্থিতিতে সেখানে কোম্পানি কমান্ডার (সিপিসি-১) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে র্যাব-১০ এর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ চন্দ্র বসু।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, কাজী ম্যানুফ্যাকচার নামে একটি প্রতিষ্ঠান আবাসিক ভবনের নিচে সম্পূর্ণ অননুমোদিতভাবে ভেজাল হ্যান্ডরাব তৈরি, মজুত ও বাজারে বিক্রি করে আসছিল।
তিনি আরও বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়া হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হ্যান্ডরাব তৈরি, মজুত, বিক্রি কিংবা বাজারজাতকরণ করা যায় না। কিন্তু কাজি ম্যানুফ্যাকচার নামের প্রতিষ্ঠানটি ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কোনো ধরনের অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে লাখ লাখ পিস হ্যান্ড রাব তৈরি করেছে এবং বাজারজাত করে আসছে। অভিযানকালে লক্ষাধিক হ্যান্ডরাব জব্দ করা হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা।
অভিযানে আটক কাজী ম্যানুফ্যাকচার প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. কাজী মুন্না আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন, গত সপ্তাহেও তিনি প্রায় ২ লাখ পিস তৈরির পর বাজারে বিক্রি করেছেন, যার দাম প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
অভিযানে উপস্থিত ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্মকর্তার বরাতে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ বসু বলেন, আমরা যে হ্যান্ডরাবগুলো এখানে জব্দ করেছি সেগুলোর কোনো গুণগত মান নেই। এই হ্যান্ডরাবে বলতে গেলে কিছু নেই, কেবল নীল রঙ রঙ, লেমন ফ্লেভার, স্পিরিট ও জেল দিয়ে তৈরি। হ্যান্ড রাব তৈরিতে যেসব উপকরণ ব্যবহার করা হয় তার কোনোটিই এখানে উপস্থিত নেই।
তিনি আরও বলেন, অভিযানে মো. কাজী মুন্না, মো. শান্ত,মো. সাব্বির সরদার ও আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া নামে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তার মধ্যে তিনজনকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একজনকে ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেইউ/এমএসএইচ/এমকেএইচ