করোনা সম্পর্কে ধারণা নেই ৩১ ভাগ রোহিঙ্গার
কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকরা (রোহিঙ্গা) ভয়াবহ করোনা ঝুঁকিতে আছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুর জন্য ঝুঁকি বেশি। সেখানকার ৩১ ভাগ মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। বেশিরভাগ মানুষ করোনা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করেন। এ অবস্থায় তাদের ঝুঁকি কমাতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক জরিপ প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
কেএনএইচ জার্মানির সহযোগিতায় সমাজকল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) ওই জরিপ পরিচালনা করে। জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরেন স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা। বক্তৃতা করেন দাতা সংস্থা কেএনএইচ জার্মানির কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মারুফ রুমি মমতাজ, ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, কেএনএইচ জার্মানির ন্যাশনাল কো-অডিনেটর মাটিলদা টিনা বৈদ্য, প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মনিরুজ্জামান মুকুল প্রমুখ।
মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে উত্থাপিত প্রতিবেদনে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ সম্পর্কে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান তা দূরীকরণে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। কোভিড-১৯ বিষয়ক তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে থাকায় মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ উন্নয়ন সহযোগী সংগঠনগুলো কর্মসূচি নিতে পারে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদভিত্তিক কোভিড-১৯ বিষয়ক জন সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান সাপেক্ষে ক্যাম্পভিত্তিক সব কার্যক্রমে এনজিও ব্যুরোর মাধ্যমে কোভিড-১৯ সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।
কেএনএইচ জার্মানির কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মারুফ রুমি মমতাজ বলেন, বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে করোনাভাইরাস। রোহিঙ্গা ক্যাম্প জনবহুল হওয়ায় সেখানে ঝুঁকি বেশি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় সচেতনতার বিকল্প নেই। সচেতনতা সৃষ্টিসহ জরিপ প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি মোকাবিলায় কেএনএইচ জার্মানির সহযোগিতায় স্কাস কক্সবাজার জেলার উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে শিশু সুরক্ষা, মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেবা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও কোভিড-১৯ এর ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে সুরক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় গত মে মাসে করোনাভাইরাস সম্পর্কে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ধারণা ও এ বিষয়ে বিদ্যমান সংকট কীভাবে উত্তরণ করা যায়, সে বিষয়ে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া সরকারের সহযোগিতায় অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
এইচএস/জেডএ/জেআইএম