কামাল লোহানীর মৃত্যু : প্রগতিশীল আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি
কামাল লোহানীর মৃত্যুতে প্রগতিশীল আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা, প্রথিতযশা সাংবাদিক, ভাষা সংগ্রামী, মুক্তিযোদ্ধা কামাল লোহানীর মৃত্যুতে জাগো নিউজের কাছে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘কমরেড কামাল লোহানী এ দেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের এক বাতিঘর। বাম-প্রগতিশীল আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কাছে তিনি অভিভাবক, পথপ্রদর্শক। তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সুখ-দুঃখের সাথী। তার মৃত্যুতে প্রগতিশীল আন্দোলনের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’
বামপন্থী বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক আরও বলেন, ‘সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কমরেড কামাল লোহানী নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। রাজনীতি আর সংস্কৃতির মেলবন্ধ ঘটিয়ে ষাটের দশক থেকে তিনি রাজপথে সোচ্চার। আমৃত্যু কমিউনিস্ট আদর্শে আস্থাশীল থেকে রাজপথে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সোচ্চার থেকেছেন। ভাষা আন্দোলন, ’৬২-র শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী আন্দোলন, ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন সামনের কাতারে। ’৭২-এর সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খণ্ডিত ও বিকৃত করার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা। রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে পাকিস্তানি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তিনি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন উদীচীর সভাপতি, ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক ও ক্রান্তির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সংগঠক হিসেবে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংবাদিক হিসেবেও তার ভূমিকা অগ্রগণ্য।’
‘কামাল লোহানী মানবমুক্তির সংগ্রামে অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন। তার সংগ্রামমুখর জীবন থেকে প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মীদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তার স্বপ্নের সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে’ যোগ করেন সেলিম।
উল্লেখ্য, শনিবার (২০ জুন) সকাল ১০টায় রাজধানীর মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কামাল লোহানী। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন।
এএসএস/বিএ/জেআইএম