করোনায় আক্রান্ত ৫৯ শতাংশ আনসার সদস্য সুস্থ
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আরও ছয় আনসার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
এ নিয়ে করোনায় বাহিনীতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৩৮ জনে। তবে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের ৩১৭ জনই সুস্থ হয়েছেন। মোট সুস্থতার হার প্রায় ৫৯ শতাংশ।
শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতর থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক (যোগাযোগ) মেহেনাজ তাবাসসুম রেবিন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের বিস্তার মোকাবিলায় জীবন বাজি রেখে কাজ করে চলেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি করোনা যুদ্ধে সম্মুখভাগে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।’
আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ আক্রান্ত সদস্যদের দ্রুত সুস্থ করে তোলার বিষয়ে বিশেষ নজরদারি বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
রেবিন বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন।’
এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে এ বাহিনীর ৫৩৮ জন সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের মধ্যে রয়েছেন কর্মকর্তা ৬ জন, ব্যাটালিয়ন আনসার ১৬৫ জন, সাধারণ আনসার ৩৫০ জন, কর্মচারী দু’জন, মহিলা আনসার তিনজন, ভিডিপি সদস্য দু’জন, বিশেষ আনসার তিনজন, উপজেলা প্রশিক্ষক দু’জন, উপজেলা প্রশিক্ষিকা একজন এবং হিল আনসার চারজন। এর মধ্যে ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭৯ জন এবং ঢাকার বাইরে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫৯ জন।
তবে এ বাহিনীতে সুস্থতার হারও সাফল্যজনক। এ পর্যন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৩১৭ জন সদস্য সুস্থ হয়েছেন, সুস্থতার হার প্রায় ৫৯ শতাংশ। সুস্থ হয়েছেন কর্মকর্তা দু’জন, ব্যাটালিয়ন আনসার ৯০ জন, সাধারণ আনসার ২১৬ জন, কর্মচারী দু’জন, নারী আনসার দু’জন, ভিডিপি সদস্য একজন, উপজেলা আনসার কমান্ডার একজন এবং বিশেষ আনসার তিনজন।
আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসায় শতভাগ সুস্থ সদস্যরাই কর্মক্ষেত্রে যোগদান করে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ বাহিনীর বিভিন্ন থানা, ক্যাম্প, হোটেল ও হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ১০১ জন। করোনা আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১৭ জন সদস্য।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাহিনীর তিন জন সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। গত ১১ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাহিনীর আব্দুল মজিদ নামে একজন সদস্য মৃত্যুবরণ করেন। আব্দুল মজিদ পিসি অঙ্গীভূত আনসার (আইডি নং-১৩১৮৯), তার বাড়িও বগুড়ায়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি গুলশান বিভাগের ভাটারা থানায় কর্মরত ছিলেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৮ জুন দুপুরে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আনসার সদস্য আব্দুস সোবহান। তার বাড়ি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার উত্তর কালাইহাট গ্রামে। মৃত্যুর পূর্বে তিনি হজরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত ছিলেন।
সর্বশেষ দায়িত্ব পালনকালে আক্রান্ত ২০ ব্যাটালিয়নের সহকারী প্লাটুন কমান্ডার মো. আব্দুর রউফ (৫৫) মারা গেছেন। তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৫ জুন) গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী থানার খামার নড়াইলের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর আগে তিনি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণাধীন মোবাইল কোর্ট ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।
জেইউ/এফআর/পিআর