তাজিয়া মিছিলে মঞ্চস্থ হবে কারবালার দৃশ্যায়ন
মুসলমানদের ত্যাগ ও শোকের একটি মাস মহররম। মহররম হিজরি বর্ষের প্রথম মাস। এমাসের ১০ তারিখ হলো পবিত্র আশুরা।হিজরির সাল অনুসারে ১০ মহররম কারবালায় হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসেনের মৃত্যুর দিনটি সারাবিশ্বে মুসলমানরা পালন করেন। প্রতিবছরের মতো এবারো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হবে। এ উপলক্ষে রাজধানীতে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।
দেশে শিয়া সম্প্রদায় মহররম মাসের প্রথম দশদিন শোক স্মরণে নানা কর্মসূচি পালন করে। আশুরার দিনে তাজিয়া বের করা হয় শোকের আবহে। মূলত ইমাম হোসেন (রা.) এর সমাধির প্রতিকৃতি নিয়ে এই মিছিল হয়। আরবি ‘তাজিয়া’ শব্দটি শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করতে ব্যবহার করা হয়।
আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসনি দালান থেকে শুরু হয় বড় তাজিয়া মিছিল। এ ছাড়াও রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগ, পল্টন, মগবাজার থেকেও আশুরার মিছিল বের হবে।
মুঘল আমল থেকেই এই অঞ্চলে তাজিয়া মিছিলের প্রচলন শুরু। ১০৫২ হিজরি সনে হোসনি দালান নির্মিত হয়।
হাজারো মানুষ এই শোক মিছিলে ‘হায় হোসেন-হায় হোসেন’ মাতম তুলে অংশ নেয়। অনেকেই এই শোকের মিছিলে কারবালার রক্তাক্ত স্মৃতি স্মরণে নিজের দেহে আঘাত করে রক্ত ঝরায়।
মহানবীর (সা.) দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন ইবনে আলী (রা.) হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম কারবালার ফোরাত নদীর তীরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শাহাদাত বরণ করেন। এই শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে সারাবিশ্বে মুসলমানরা আশুরা পালন করেন।
লালবাগের হোসনি দালানের তত্ত্বাবধায়ক মির্জা এমদাদ আলী বলেন, আশুরা উপলক্ষে ৮ মহররম সন্ধ্যায় মিছিল হয়। সন্ধ্যায় হোসনি দালানের ইমাম বাড়ি থেকে মিছিল বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। ৯ মহররম ভোর রাতের মিছিল হবে দিবাগত রাত দেড়টায়।১০ মহররম আশুরার দিনে প্রধান মিছিল তাজিয়া মিছিল হিসেবে খ্যাত হলেও এটিকে বলা হয় মঞ্জিল গাশত। এই দিবসের তাৎপর্য ও নানা বিষয়ে রাতে বয়ান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, দিবসটি উপলক্ষে বকশীবাজার রোড, নিউমার্কেট এবং ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়ক পার হয়ে ধানমন্ডি লেক সংলগ্ন কারবালা প্রাঙ্গণে শেষ হবে।
তাজিয়া মিছিলের পুরোটি সাজানো হয় কারবালার শোকের নানা প্রতিকৃতি নিয়ে। মিছিলের মূল দায়িত্বে রয়েছে হোসাইনি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
সাকির নামে এর এক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, মিছিল থেকে নানাভাবে কারবালার দৃশ্যায়ন এখানে মঞ্চস্থ করা হবে। মিছিলে বুক চাপড়ে, জিঞ্জির দিয়ে শরীরে আঘাত করে মাতম প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়াও যে যার মতো করে মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন নিশান বহন করবেন।
মিছিলে শোকের গান হবে। দুটি ঘোড়া থাকবে। ইমাম হোসেন যখন কারবালায় যান তখন ঘোড়া ছিল এক রকম, যুদ্ধ শেষে রক্তে ভেজা ছিল ঘোড়া| তারই স্মরণে রক্ত রং দিয়ে ঘোড়াকে সাজানো হবে।
জেইউ/জেডএইচ/আরআইপি