করোনায় মৃত্যুর সেঞ্চুরি চট্টগ্রামে
চট্টগ্রামে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে কিংবা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর খবর আসছে প্রতি মুহূর্তে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট ১০০ জনের মৃত্যু হলো।
জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।
গত ২৬ মার্চ থেকে চট্টগ্রামে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরুর পর প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৩ এপ্রিল। ৯ এপ্রিল এক বৃদ্ধ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। পরে ১১ এপ্রিল নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়।
এরপর থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বাড়তে থাকে।চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিল্পপতি, আলেম, কাস্টম কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা, শিক্ষার্থী কারও নাম বাদ যাচ্ছে না মৃত্যুর মিছিল থেকে।
তবে বর্তমানে করোনায় মৃত্যুর চেয়ে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বেশি হচ্ছে চট্টগ্রামে।
নগরের বিভিন্ন হাসপাতাল, মৃত ব্যক্তিদের সৎকারকারী প্রতিষ্ঠান ও মাঠপর্যায় থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কিংবা উপসর্গ নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে চট্টগ্রামে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় এখন আর মৃত ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে না। তাই করোনাক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের সঠিক হিসাবও পাওয়া যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব অনুযায়ী, এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০০ জন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি শুরুর পর থেকে চট্টগ্রামে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃতদের দাফন-সৎকার করেছে তাদের সে হিসাব আরও অনেক বেশি।
আল মানহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত তারা ১২০ জনের মরদেহ দাফন করেছে।
এদিকে চট্টগ্রামে করোনায় মারা যাওয়া সনাতন ধর্মালম্বীদের মরদেহ সৎকার করছে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘করোনা মৃতদেহ সৎকার সংঘ’। সংগঠনটির আহ্বায়ক সুমন পাল জাগো নিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা ২৫ জন করোনারোগী ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এমন মানুষের মরদেহ সৎকার করেছেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের সদস্য দেবাশিষ পালিত দেবু জাগো নিউজকে জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা চট্টগ্রামে ৪৫ জনের মরদেহ দাফন ও সৎকার করেছেন। যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে অথবা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
এছাড়া চট্টগ্রামে করোনায় বা উপসর্গ নিয়ে মৃত নারীদের দাফনে কাজ করছে ‘মুর্দা সেফা’ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনের প্রকল্প পরিচালক ও উদ্যোক্তা আলোকচিত্রী মো. শাহজাহান জানান, গত দেড় মাসে তার সংগঠন চট্টগ্রামে অর্ধশতাধিক নারীর দাফন কাজ সম্পন্ন করেছেন। এদের সবাই করোনাভাইরাসে বা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
সব মিলিয়ে গত দেড় মাসে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত অন্তত ২৪০ জনের দাফন ও সৎকার করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব প্রতিষ্ঠানের বাইরেও চট্টগ্রামে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃতদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন ও সৎকারের কাজ করছে।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রামে সংগঠনটির করোনা সেলের প্রধান ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘যারা হাসপাতালে মারা যাচ্ছে তাদের হিসাব হাসপাতালগুলো রাখছে। এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃতু দুই ধরনের রোগী রয়েছে। কিন্তু অনেকে রোগ গোপন করছেন, তারা বাসাতেই মারা যাচ্ছেন। তাই সে হিসাব আমাদের কাছে নেই। করোনায় চট্টগ্রামে মৃত্যুর যে পরিসংখ্যান দেয়া হচ্ছে প্রকৃত অর্থে এর ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি রোগী মারা যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষা সহজে না হওয়ার কারণে মৃত্যু ও আক্রান্তের প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।’
আবু আজাদ/বিএ/পিআর
সর্বশেষ - জাতীয়
- ১ আজম-পলক পরিবারের ১৩৬ ব্যাংক হিসাব, হাজার কোটির অস্বাভাবিক লেনদেন
- ২ প্রশাসন ছাড়া অন্য ক্যাডারে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের আবেদনের পরামর্শ
- ৩ অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর আস্থা কমেছে ৮ শতাংশ মানুষের
- ৪ দেড় শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাঝ সমুদ্রে বিকল সার্ভিস বোট, পরে উদ্ধার
- ৫ শিক্ষার্থীরা রাজনৈতিক দল করলে ভোট দেবেন ৪০ শতাংশ মানুষ