করোনায় মৃত্যুর মিছিলে আরও ৩৫ জন, নতুন শনাক্ত ২৪২৩
মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জন মারা গেছেন। ফলে করোনায় মোট মারা গেলেন ৭৮১ জন। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৪২৩ জন। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৭ হাজার ৫৬৩ জনে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন।
তিনি ৫০টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ হাজার ৭৮৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১২ হাজার ৬৯৪টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ৫৮ হাজার ২৭৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৪২৩ জনের দেহে। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৫ জনের। এদের মধ্যে ২৯ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৮১ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৫৭১ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ১৬১ জনে।
নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ২৯ জন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ২১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে নয়জন, সিলেট বিভাগে দুজন এবং রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে একজন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২২ জন মারা গেছেন হাসপাতালে, ১২ জন বাড়িতে এবং একজনকে হাসপাতালে আনার পর মৃত ঘোষণা করা হয়। বয়সের দিক থেকে ২১ থেকে ৩০ বছরের তিনজন, ত্রিশোর্ধ্ব একজন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১৪ জন, ষাটোর্ধ্ব ১১ জন, সত্তরোর্ধ্ব দুজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবারের (৩ জুন) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ জন মারা গেছেন। ১২ হাজার ৫১০টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৬৯৫ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুও কমেছে, শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও কমেছে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড আছে। এ তথ্য জানানো হয় ৩১ মে’র বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে দুই হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৮৬ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ছয় হাজার ৭৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৩০ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৬৭৪ জন।
দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৩৭৫ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৯৫ হাজার ১৮৮ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৬৩৪ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৩৭ হাজার ৬১৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৫৬৯ জন।
দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে ডা. নাসিমা বলেন, মনে রাখবেন নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে, নিজের পরিবারের সুরক্ষাও আপনার হাতে।
গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে করোনাভাইরাসের প্রকোপে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে তিন লাখ ৮৮ হাজার। তবে ৩১ লাখ ৮২ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।
পিডি/এমইউ/এইচএ/এমএস