ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভরদুপুরে ঢাকার রাস্তায় সেই চেনা যানজট!

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০৬:১৮ পিএম, ০৩ জুন ২০২০

‘কী ব্যাপার, দেশ কি করোনা মুক্ত হয়ে গেল নাকি? এমন কঠিন যানজট তো ঢাকা শহরে কয়েক মাস চোখে পড়েনি, রিকশা, গাড়ি, মোটরসাইকেল কিছুই তো নড়ছে না। বাড়ি ফিরে কাউকে বললে বিশ্বাস করবে না যে যানজটে আটকে থাকার কারণে ফিরতে বিলম্ব হয়েছে।’

বুধবার (৩ জুন) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের কম্পিউটার মার্কেট মাল্টিপ্লান সেন্টারের সামনের রাস্তায় রিকশা আরোহী এক মধ্যবয়সী লোক এ কথা বলছিলেন। ভরদুপুরে প্রখর রোদে রিকশায় বসে ঘামছিলেন তিনি। সামনে বাস, প্রাইভেটকার, পুলিশ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্যাডেলচালিত রিকশা ও ভ্যান গাড়িসহ সব বাহন জটে থমকে আছে। সায়েন্স ল্যাবরেটরির ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত যতদূর চোখ যায়, কেবল বিভিন্ন যানবাহনের লাইন।

jagonews24

শুধু এলিফ্যান্ট রোডে নয়, আজ বুধবার (৩ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাটে মানুষ ও যানবাহনের সংখ্যা দেখা গেছে তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অন্য দিনের তুলনায় বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতান কেন্দ্রসহ সর্বত্রই মানুষের সরব উপস্থিতি রয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা মেনে অধিকাংশ মানুষই মুখে মাস্ক পরে বেরিয়েছেন। বিভিন্ন মার্কেট কর্তৃপক্ষকেও দেখা গেছে, প্রবেশপথে জীবাণুনাশক কক্ষ তৈরি করে এবং আগত ক্রেতাদের স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করে তবেই মার্কেটে প্রবেশ করাতে।

রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যাও ছিল বেশি, যার ফলে কোথাও কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ট্রাফিক পুলিশকে সড়ক সামলাতে ততটা ব্যস্ত থাকতে দেখা না গেলেও আজ অনেককে সেই ভূমিকায় তৎপর দেখা যায়।

jagonews24

রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা আব্দুল হালিম তার ছেলের জন্য একটি ডেস্কটপ কম্পিউটার কেনার জন্য এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্লান সেন্টারে এসেছেন। তিনি জানান, লিফট থেকে শুরু করে প্রতিটি দোকানের সামনে অসংখ্য মানুষের ভিড়। যখন করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বেশি নাজুক ছিল না, তখনো এমন ভিড় দেখেননি বলে জানান তিনি।

রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান কর্মচারী আব্দুস সালাম জানান, গত দুদিন গণপরিবহনে যাত্রী খুব কম থাকলেও আজ যাত্রীর উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি।

jagonews24

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। দুই মাসেরও বেশি সময় সাধারণ ছুটি শেষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্তে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলেছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে মার্কেট শপিংমলসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া হয়েছে। চালু হয়েছে গণপরিবহনও।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি যেমন- মুখে মাস্ক পরা ও হ্যান্ড গ্লোভস ব্যবহার করা, ঘন ঘন সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, বাইরে বের হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি মেনে না চললে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে।

jagonews24

সবশেষ তথ্যানুসারে, দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে ৭৪৬ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায়ই মারা গেছেন ৩৭ জন। আর করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫ হাজার ১৪০ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায়ই আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৬৯৫ জন। এছাড়া করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৫৯০।

এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ