ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

চট্টগ্রামের ৩ হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম দিল এস আলম গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | প্রকাশিত: ০৬:৪৫ পিএম, ০২ জুন ২০২০

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় চট্টগ্রামের কয়েকটি হাসপাতালে অত্যাধুনিক হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলাসহ (অক্সিজেন) চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের তিনটি হাসপাতালে ৮টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা প্রদান করা হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের তৈরি এয়ারবু হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলার প্রতিটির মূল্য ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া ওই তিন হাসপাতালে চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবায় ৬টি আইসিউযুক্ত ভেন্টিলেটর প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক), চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের এসব চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হয়। এস আলম গ্রুপের পক্ষে তা হস্তান্তর করেন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের পিএস আকিজ উদ্দিন।

জানা গেছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য ৪টি আইসিউযুক্ত ভেন্টিলেটর, ৪টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য ২টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের জন্য ২টি আইসিউযুক্ত ভেন্টিলেটর ও ২টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা প্রদান করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ফিলিপস ব্র্যান্ডের আইসিউযুক্ত প্রতিটি ভেন্টিলেটরের মূল্য ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৬টি আইসিইউযুক্ত ভেন্টিলেটরের জন্য খরচ হয় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের তৈরি এয়ারবু হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলার প্রতিটির মূল্য ১৫ লাখ টাকা। ৮টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলা কিনতে খরচ হয় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা।

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পিএস আকিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে জানাতে ‘চেয়ারম্যান মহোদয়ের নিষেধ রয়েছে।’

এর আগে এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য ৫০০টি পিপিই প্রদান করা হয়। এছাড়া চিকিৎসকদের ডিউটি রুমের জন্য দুটি ২ টন এসি, ২টি নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করা হয়।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের কোয়ারান্টাইনে থাকা চিকিৎসকদের খাবারের জন্য এস আলম গ্রুপ ১ লাখ টাকা প্রদান করে। এছাড়া এই হাসপাতালের জন্য টাকা ১টি ২ টন এসি, ২টি নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে বিআইটিআইডির চিকিৎসকদের ডিউটি রুমের জন্য ১টি ২ টন এসি, ২টি নমুনা সংগ্রহের বুথ ও চট্টগ্রামের ১৪ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিটিতে ৫০টি করে ৭০০ পিপিই প্রদান করে এস আলম গ্রুপ। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে গতকাল সোমবার ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেলে একটি করে ভেন্টিলেটর দেয়া হয়েছে।

এদিকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের পরিবারে হানা দিয়েছে করোনাভাইরাস। করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ২২ মে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানের বড় ভাই মোরশেদুল আলমের মৃত্যু হয়।

এছাড়া ভাইরাসটিতে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদের মা-ছেলে, ভাই-ভাবিসহ পরিবারের আট সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।

সর্বশেষ মোরশেদুল আলমের পুত্রবধূ ইশফাক আরা জাহান রাফিকা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রাফিকা মৃত মোরশেদুল আলমের ছেলে মাহমুদুল আলম আকিবের স্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের মেয়ে।

চট্টগ্রামের এলিট সোসাইটির এ পরিবারে কীভাবে করোনায় সংক্রমিত হলো এ নিয়ে শুরু থেকেই নানা কথা শোনা যাচ্ছিল। জানা গেছে, চলতি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশজুড়ে যখন লকডাউন চলছিল, তখন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের মেয়ে জেবা জামান চৌধুরীর সঙ্গে এস আলম পরিবারের আরেক সন্তান ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সামাদ লাবুর ছেলে আতিকুল আলমের বাগদান সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানের পর থেকেই পরিবারটির সদস্যরা করোনায় আক্রান্ত হতে থাকেন।

আবু আজাদ/এমএসএইচ/পিআর