করোনায় একদিনে ২২ মৃত্যু, শনাক্ত ২৩৮১
মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে ভাইরাসটিতে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৭২ জনে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন দুই হাজার ৩৮১ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪৯ হাজার ৫৩৪ জনে।
সোমবার (১ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বুলেটিন উপস্থাপন করেন।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ হাজার ১০৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১১ হাজার ৪৩৯টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো তিন লাখ ২০ হাজার ৩৬৯টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৩৮১ জনের দেহে। ফলে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯ হাজার ৫৩৪ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে আরও ২২ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৭২ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৮১৬ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ৫৯৭ জনে।
নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ১৯ জন পুরুষ, তিনজন নারী। ১১ জন ঢাকা বিভাগের, আটজন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুইজন সিলেট বিভাগের এবং একজন বরিশাল বিভাগের। এদের মধ্যে হাসপাতালে ১৫ জন, বাসায় ছয়জন এবং হাসপাতালে আনার পর একজন মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, চল্লিশোর্ধ্ব আটজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব চারজন, ষাটোর্ধ্ব সাতজন এবং সত্তরোর্ধ্ব দুজন রয়েছেন।
গত রোববারের (৩১ মে) বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ জন মারা গেছেন, যা একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির রেকর্ড। ১১ হাজার ৮৭৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৫৪৫ জনের দেহে, এটিও একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় কমেছে মৃত্যু, কমেছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও।
সোমবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তে হার ২০ দশমিক ৮১ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্ত বিবেচনার সুস্থতার হার ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৪৪৯ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ৭ হাজার ২১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২২২ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৮ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা আছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। রাজধানী ঢাকায় ৭ হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে আছে ছয় হাজার ৩৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা আছে ৩৯৯টি। ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১১২টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ হাজার ৭০৭ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ২ লাখ ৮৭হাজার ৮৭৯ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৩ হাজার ৭৫২ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৩ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৫৯ হাজার ১৩৬ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে।
তিনি বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা, বাইরে বেরোলে হ্যান্ড গ্লোভস পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬২ লাখ ৬৮ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৭২ হাজারে। তবে সাড়ে ২৮ লাখের মতো রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।
পিডি/এমইউ/এইচএ/পিআর