স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সংশোধিত ১২ নির্দেশনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং বিস্তাররোধে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংশোধিত ১২টি নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সংশোধিত স্বাস্থ্যবিধি সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধীনস্থ দফতর ও প্রতিষ্ঠানসহ সকল সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ প্রশাসন-১ এর শাখার উপ-সচিব খন্দকার জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সংশোধিত নির্দেশনা জারি হয়।
সংশোধিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে:
১. অফিস চালু করার পূর্বে অবশ্যই প্রতিটি অফিস কক্ষ/আঙিনা/রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
২. প্রত্যেক মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠানে প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরে তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।
৩. অফিস পরিবহনে অবশ্যই শতভাগ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় পারস্পরিক ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সকলকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিন স্তরবিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে।
৪. সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার ব্যবহার করা যাবে, কাপড়ের মাস্ক সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
৫. যাত্রার পূর্বে এবং যাত্রাপথে বারবার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৬. খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে।
৭. প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৮. অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৯. কর্মস্থলে সকলকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং ঘন ঘন সাবান পানি বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
১০. কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা প্রতিরােধে সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা তা মনিটরিং করতে হবে। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১১. দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্যসুরক্ষা নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
১২. কোনো কর্মচারীকে অসুস্থ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসােলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য, আজ (শনিবার) শেষ হচ্ছে করোনাভাইরাসের কারণে সরকার ঘোষিত টানা ৬৬ দিনের ছুটি। এটিই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে লম্বা ছুটি। এ ছুটির অবসানের ফলে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সরকারি নির্দেশনা সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামছে গণপরিবহনও (বাস, লঞ্চ, ট্রেন)।
১৫ জুন পর্যন্ত অফিস, গণপরিবহনসহ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কীভাবে পরিচালিত হবে এবং কোন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে, সেই বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
অফিস খোলার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক আদেশে বলেছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তানসম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
বন্ধ থাকা বাস, লঞ্চ, ট্রেন চালুর নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বিধিনিষেধ নিশ্চিত করে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
সড়কে গণপরিবহন চালাচলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ১৩টি কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে। অপরদিকে যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচলের বিষয়ে ১৪টি করে ও বিমান চলাচলের বিষয়ে ১০টি কারিগরি নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এমইউ/বিএ/এমকেএইচ