বিএসএমএমইউয়ের পরীক্ষায়ও ডা. জাফরুল্লাহর করোনা পজিটিভ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পিসিআর ল্যাবরেটরির পরীক্ষাতেও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে।
গতকাল বুধবার (২৭ মে) তার করোনাভাইরাস পজিটিভের প্রতিবেদন দেয় বিএসএমএমইউ। বিষয়টি জাগোনিউজকে নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা শনাক্তকরণ কিট উদ্ভাবক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘তার বিএসএমএমইউয়ের পিসিআর ল্যাবে পজিটিভ হয়েছে।’
ডা. জাফরুল্লাহর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আজ দুপুরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে গিয়েছিলাম। স্যারের সাথে আমার দেখা হয়েছে। স্যার ভালোই আছেন। স্যার বললেন, তোমরা চিন্তা করো না। আমি ভালোই থাকবো। তোমরা তোমাদের মতো কাজ কর। অনেক সময় মনের জোরটা নির্ভর করে। উনার তো অসম্ভব মনের জোর আছে। আত্মবিশ্বাস আছে। উনি কোনো কিছুতে আতঙ্কিত হন না। আমাদের দেশে যারা বয়োবৃদ্ধ, তাদের অনেকে ভয় পান। অনেকের অনেক আন্ডারলাইন ডিজিজ থাকে। উনারও আছে। তার প্রতি সপ্তাহে কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হয়। সর্বোপরি তার মনের জোর আছে। উনি ভয় পান না করোনাকে। তিনি বলেন, করোনাকে আমি জয় করব।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী হালকা জ্বর অনুভব করলে গত ২৪ মে তার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের মাধ্যমে করোনার নমুনা পরীক্ষা করেন তিনি। সেই পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। তবে ওই কিট সরকারের কাছ থেকে এখনও অনুমোদন না পাওয়ায় তিনি বিএসএমএমইউয়ের পিসিআর ল্যাবরেটরিতেও নমুনা পরীক্ষা করালেন। এখানেও তার করোনা পজিটিভ এসেছে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটে যে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছিল, তা করেছিলেন ড. বিজন কুমার নিজে। সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন, না হয় তার আগের দিন স্যার আমাকে ফোন করে বললেন, আমার তো জ্বর আসছে বিজন। কী করা যায়? তখন আমি বললাম, দ্রুত আপনার স্যাম্পল পাঠিয়ে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তা আসল। ১৫ মিনিটের মধ্যে টেস্ট করে দেখলাম উনি পজিটিভ। তারপর আমি জানিয়ে দিয়েছি, আপনি পজিটিভ।’
নিজেদের কিটে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাসায় আছেন এবং চিকিৎসা নিচ্ছেন। একই সঙ্গে তার ডায়ালাইসিস চলছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সন্ধ্যায়ও তার ডায়ালাইসিস হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার কিছুদিন পর থেকে এই ভাইরাস শনাক্তরণে কিট উদ্ভাবনে নামে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি দল তা উদ্ভাবনও করে ফেলে।
উদ্ভাবিত এ কিটের সক্ষমতা যাচাই চলছে বিএসএমএমইউতে। এ পরীক্ষায় সফলতা পেলে তাদের চূড়ান্ত র্যাপিড ডট ব্লট কিট ব্যবহারের অনুমোদন দেবে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। তারপরই গণস্বাস্থ্য তাদের উদ্ভাবিত কিটে সবার করোনা পরীক্ষা করতে পারে।
এ কিট উদ্ভাবন প্রক্রিয়া মিডিয়াসহ বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগের সমন্বয় করে আসছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
পিডি/এইচএ/পিআর