জাপানি বিনিয়োগ আনতে কাজ চলছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
চীনে যেসব বিদেশি বিনিয়োগ আছে এর মধ্যে জাপান ঘোষণা দিয়েছে তারা তাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান রিলোকেট (স্থানান্তরিত) করবে। ডিপ্লোমেটিক চেইনে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে, যাতে জাপান শিল্পপ্রতিষ্ঠান রিলোকেট করলে তা চায়না থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এটার জন্য প্রচেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বুধবার (২০ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য সহায়ক পরামর্শক কমিটির সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সভাপতিত্বে সভায় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এছাড়াও অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের দুটা খাত ভালোভাবেই চলছিল, একটি হলো রফতানি, অপরটি হলো রেমিট্যান্স। বাংলাদেশে যারা তৈরি পোশাক খাতে অর্ডার করেছিল ইতিমধ্যেই তাদের অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যাবে অর্ডার বাতিল না করে। এজন্য বাংলাদেশ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে এবং প্রতিশ্রুতিও পাওয়া গেছে তারা অর্ডার বাতিল করবে না। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের কাছ থেকে ওষুধ নেবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যে সকল শ্রমিক বিভিন্ন দেশে আছে, সে সকল দেশকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশির থাকা খাওয়ার কোনো সমস্যা না হয়, সে বিষয়ে দেখার জন্য। সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব দেশ নিশ্চয়তা দিয়েছে। তারা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার প্রবাসীদের জন্য টাকা পাঠিয়েছে, যাতে তাদের কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। একই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’
পরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘চীনে যেসব বিদেশি বিনিয়োগ আছে, এর মধ্যে জাপান ঘোষণা দিয়েছেন তারা তাদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান রিলোকেট করবে। ডিপ্লোমেটিক চেইনে সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে যাতে জাপান শিল্পপ্রতিষ্ঠান রিলোকেট করলে তা চায়না থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসে। এটার জন্য প্রচেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক জোন ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।’
শিল্প মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, ‘করোনা পরবর্তীতে আমাদের বেশ করে কাজ করতে হবে। চলমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে। নতুন করে বিশ্ব পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকরীদের আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের শিল্প খাতকে সমৃদ্ধ করতে হবে। এখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে শক্ত নীতিমালা গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশে বিনিয়োগ আসলে শিল্প স্থাপন হবে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সেক্ষেত্রে দেশের ও বিদেশফেরত কর্মীরা বিনিয়োগসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘রিলোকেটকারীদের কিভাবে সুযোগ সুবিধা দেব, এখন সেটা চিন্তা করার উচিৎ। দেশে আকর্ষণীয় বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা দেয়া গেলে জাপান ও আমেরিকার যে সকল বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রিলোকেট করতে চাচ্ছে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এটা দূর করতে হবে। ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া বৈদেশিক বিনিয়োগের একটি বড় স্থান অধিকার করেছে। তারা নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা ঘোষণা করেছে। আমাদেরও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে।’ এজন্য ছোট ছোট উদ্যোগগুলোকে সমন্বয় করার জন্য একটি ট্যাস্কফোর্স গঠনের পরামর্শ দেন তিনি।
এমইউএইচ/এফআর/পিআর