ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আম্ফানের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ-ভারতের সুন্দরবন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৩৫ পিএম, ১৮ মে ২০২০

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের স্থলভাগে আঘাতের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের সুন্দরবন অংশ। কেন্দ্রবিন্দু যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে আম্ফানে ক্ষতি কম হবে। তবে আঘাতের কেন্দ্রবিন্দু পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবর্তন হয়ে সুন্দরবন ছাড়া দেশের অন্য অংশে আঘাত হানলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার (১৮ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ।

তিনি বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে, স্থলভাগে আঘাতের সময় আম্ফানের গতিবেগ থাকবে ১৪০-১৬০ কিলোমিটার।’

তিনি আরও বলেন, ‘আম্ফান আঘাত হানার এখন যে লোকেশন আছে, সেটা হলো পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের যে সীমান্ত আছে সুন্দরবনের, সেটাকে সেন্টার ধরা হয়েছে। তবে এটা পরিবর্তন হতে পারে। এখনও যেহেতু সময় আছে।’

তিনি বলেন, ‘সেন্টার যদি সুন্দরবন হয়, তাহলে তো ওই স্পিডে (১৪০-১৬০ কিলোমিটার) কোনো ক্ষতি হবে না। ওই সেন্টার যদি আবার পটুয়াখালী হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হবে। এজন্য আগে লোকেশন ঠিক করতে হবে। সেজন্য লোকেশনকে ফিক্সড (স্থান) করার পরে স্পিডের (ঘূর্ণিঝড়ের গতির) কথা আসবে।’

এদিকে বিকেল ৩টার তথ্য বিশ্লেষণ করে আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলায় এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারি থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সোমবার (১৮ মে) বিকেল ৩টার তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

তাতে আরও বলা হয়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’আম্ফান’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে বর্তমানে পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি সোমবার (১৮ মে) বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

পিডি/এএইচ/এমএস