চিকিৎসাসেবা চেয়ে একদিনে ২ লাখ ২৭ হাজার কলের রেকর্ড
করোনার কারণে সাধারণ ছুটি থাকলেও বাইরে মানুষের আনাগোনা থেমে নেই। হাটবাজার, দোকানপাট, রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল অনেকটাই যেন স্বাভাবিক। অন্যদিকে সরকারও প্রথম দিকে মানুষকে ঘরে থাকার জন্য যে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল, সেটাও এখন আর সেভাবে নেই। খোলা হয়েছে কলকারখানা-দোকানপাট। এই সুযোগে দেশে করোনার বৃদ্ধিও হয়েছে বেশ। প্রতিদিনই প্রায় রেকর্ড পরিমাণ করোনারোগী শনাক্ত হচ্ছে।
তবে দেশে এখনও করোনা পরীক্ষার সহজলভ্যতা তৈরি হয়নি। ফলে নিশ্চিতভাবে জানা যাচ্ছে না, ঠিক কত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে প্রতিদিনই অসংখ্যা মানুষ স্বাস্থ্য অধিদফতরের চালু করা হটলাইনে কল করে চিকিৎসাসেবার জন্য। তবে কলের হার গত কয়েক দিনে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষের কাছ থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই লাখ ২৭ হাজার ৭৯৩ জনের কাছ থেকে ফোনকল গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। চিকিৎসাসেবা চেয়ে এটিই এখন পর্যন্ত রেকর্ড সংখ্যক কল।
রোববার (১৭ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস বিষয়ক নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (মহাপরিচালকের দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, ‘ফোনকলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। ২৪ ঘণ্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার ৭৯৩টি। এ পর্যন্ত ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫৮ লাখ ১২ হাজার ৪৭৩টি।’
গত চারদিন আগেও অবস্থা এতটা ভয়াবহ ছিল না। ১৪ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় তারা এক লাখ ৫১ হাজার ৫০২টি ফোনকল গ্রহণ করেছেন। ওইদিন পর্যন্ত এটি ছিল সর্বোচ্চ।
তারপর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। পরদিন অর্থাৎ, ১৫ মে এক লাখ ৮৫ হাজার ২৪৫টি ফোনকল এবং ১৬ মে এক লাখ ৮২ হাজার ৩৭৭টি ফোনকল গ্রহণ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
অর্থাৎ, গতকাল শনিবারের (১৬ মে) তুলনায় আজ রোববার একদিনের ব্যবধানে চিকিৎসাসেবা চেয়ে ৪২ হাজার ৫৪৮টি বাড়তি কল গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
করোনার কারণে দেশের হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। ফলে ফোন করে মানুষজন করোনাসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা পরামর্শও গ্রহণ করছে।
সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের অনলাইন প্লাটফর্ম মুক্তপাঠে হটলাইন সেবা দেয়ার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক ১৫ হাজার ৯২২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ১২৯ জন। বর্তমানে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চার হাজার ১৫৭ জন চিকিৎসক। এখানে গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৫৪ জন চিকিৎসক।’
এদিকে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ৩২৮ জন মারা গেলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ২৭৩ জন, যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২২ হাজার ২৬৮ জনে।
পিডি/বিএ/এমকেএইচ