ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

হাসপাতাল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ফল বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ১৬ মে ২০২০

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে চাষিদের কথা বিবেচনা করে হাসপাতাল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আম, লিচুসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক।

শনিবার (১৬ মে) করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আম, লিচু ও অন্যান্য মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে অনলাইনে (জুম প্ল্যাটফর্মে) মতবিনিময় সভার সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

সভায় মৌসুমী ফল ও কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়।

কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনলাইন সভায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এতে অংশ নিয়ে মতামত দেন।

এছাড়া জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংসদ সদস্য সামিল উদ্দিন আহম্মেদ শিমুল, জাতিসংঘের কৃষি ও খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন ছাড়াও কয়েক জেলার জেলা প্রশাসক, ফল চাষি ও ব্যবসায়ী, আড়তদার, সংশ্লিষ্ট সমিতির কর্মকর্তারা এ সভায় যুক্ত হয়ে মতামত দেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশ ব্যারাক, সেনাবাহিনীর ব্যারাক, হাসপাতাল, জেলখানাসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে কৃষকের কাছ থেকে আম কিনে সরবরাহ করা গেলে আমের বাজারজাতকরণে কোনো সমস্যা হবে না। এ সংকটের সময়ে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।‘

সভায় মতিয়া চৌধুরী ছাড়াও বেশ কয়েকজন আলোচক সরকারিভাবে ফল কিনে তা হাসপাতাল, জেলখানা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিতরণের পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য আম, লিচুসহ মৌসুমী ফল দেয়া এবং হাসপাতারেও সরকারের পক্ষ থেকে রোগীদের পথ্যে মৌসুমী ফল রাখার ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হবে।’

সারাদেশে ফল বিপণনে আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সামনে আনা হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, শুধু ফলমূল নয়, সব কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব, কৃষক এবং চাষিরা যেন ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করা হবে।

এবারের মৌসুমী ফল বিপণনে জেলায় জেলায় মার্কেট করতে চান জানিয়ে রাজ্জাক বলেন, খোলা মাঠ বা স্টেডিয়ামে স্থাপন করা সেই মার্কেটে সাপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনগুলোতে অন্য জেলা থেকে আম আসবে।

যেসব জেলায় বেশি আম উৎপাদন হয় সেখানে আগামী বছরের মধ্যে ‘প্রসেসিং সেন্টার’ করারও নিশ্চয়তা দেন কৃষিমন্ত্রী।

ফল ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন, প্রয়োজনে তাদেরকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রত্যয়নপত্র দিয়ে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা করা, মৌসুমি ফল ও কৃষিপণ্য পরিবহনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের অবাধ যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা, ফল ও কৃষিপণ্য পরিবহনের সময় কেউ যাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাধ্যমে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেই ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, ফল পরিবহনে বিআরটিসির ট্রাক ব্যবহার, স্থানীয়ভাবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানো, পার্সেল ট্রেনে মৌসুমি ফল ও কৃষিপণ্য পরিবহনের আওতা বাড়ানো, হিমায়িত ওয়াগন ব্যহার করা, বিভিন্ন অঞ্চলে ফল পরিবহন করা ফিরতি ট্রাকের জন্য বঙ্গবন্ধু সেতুতে টোল কমানো এবং ত্রাণ হিসেবে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতে আম, লিচুসহ মৌসুমি ফল অন্তর্ভুক্ত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হবে।

সভায় জানানো হয়, এ বছর ১ লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে এবং প্রত্যাশিত উৎপাদন ২২ লাখ ৩২ হাজার টন। রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরা, নাটোর, গাজীপুর এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলায় অধিকাংশ আমের ফলন হয়। লিচুর আবাদ হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে এবং প্রত্যাশিত উৎপাদন ২ লাখ ৩২ হাজার টন। অধিকাংশ লিচুর ফলন হয় রাজশাহী, দিনাজপুর, পাবনা, গাজীপুর এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলায়। কাঁঠালের আবাদ হয়েছে ৭১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ও সম্ভাব্য উৎপাদন ১৮ লাখ ৮৯ হাজার টন। টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও রাঙ্গামাটিতে সবচেয়ে বেশি কাঁঠাল উৎপাদন হয়। অন্যদিকে, আনারসের আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে ও সম্ভাব্য উৎপাদন ৪ লাখ ৯৭ হাজার টন। আনারসের সিংহভাগ উৎপাদন হয় টাঙ্গাইলে।

আরএমএম/এএইচ/জেআইএম