ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

আমি ভিক্ষুক না, দয়া করে সাহায্য করুন

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল | প্রকাশিত: ০৯:২৭ এএম, ১৩ মে ২০২০

‘আল্লাহর নামে বলছি বিশ্বাস করেন, আমি ভিক্ষুক না, আমার স্বামী একজন কাঠমিস্ত্রি। গত তিন মাস ধরে ঘরে বেকার বসা তিনি। স্থানীয় কমিশনারসহ অনেকের কাছে এক কেজি চালের জন্য একাধিকবার ধরনা দিয়েছি। তাদের মন গলাতে পারিনি। ঘরে স্বামী ও তিন সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। নিরুপায় হয়ে স্বামীর কাছে দুই সন্তানকে রেখে রাস্তায় নেমেছি। শবে বরাতের পর থেকে মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য নিচ্ছি। দয়া করে আমাকে কিছু সাহায্য করেন।’

মঙ্গলবার (১২ মে) দুপুর আনুমানিক ১টায় রাজধানীর লালবাগ কেল্লার অদূরে দাঁড়িয়ে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা নূরজাহান বেগম করোনা সংক্রমণের কারণে এ ভাবেই ঘর থেকে পথে নামার কারণ বর্ণনা করেন।

নূরজাহান বেগম জানান, স্বামী ও সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে এভাবে পথে নেমে আসতে হবে তা কখনো কল্পনাও করেননি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নূরজাহান বেগম বলেন, কাঠমিস্ত্রি স্বামী যা আয় করত তা দিয়ে সংসার ভালোই চলত। কখনো কারো কাছ থেকে একটি কাঁচা মরিচও ধার করে আনতে হয়নি। বড় ছেলেটাকে মাদ্রাসায় পড়াতেন। টাকার অভাবে এখন আর পড়াতে পারছেন না। স্বামীও লজ্জায় পথে নামতে পারছেন না। নিরুপায় হয়ে তিনি নিজেই স্বামীর কাছে সন্তানদের রেখে পথে নেমেছেন। সাহায্য হিসেবে খুব বেশি টাকাপয়সা পান না। দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পান। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মাত্র ৩০ টাকা সাহায্য পেয়েছেন বলে জানালেন নূরজাহান বেগম।

help

প্রায় একই সময়ে সেখানে একটি ছোট্ট বাচ্চা কোলে হাজির হন সালমা নামের আরেক বিধবা গৃহবধূ। রাজধানীর হাজারীবাগের বাসিন্দা সালমা বেগম করোনার সংক্রমণের আগে চারটি বাসায় ছোটা বুয়া হিসেবে কাজ করতেন। যা আয় হত তা দিয়ে মোটামুটি একমাত্র মেয়ে শিশুটিকে নিয়ে বেশ ভালোভাবে জীবন-যাপন করছিলেন তিনি।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সালমা বেগম জানান, সংক্রমণের শুরু থেকে যেসব বাসায় কাজ করতেন, তারা কাজে রাখছেন না। বাসায় প্রবেশ করতে দেয় না। পাঁচ বছরের শিশুটিকে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করাতে ও সংসার খরচ চালাতে তিনি পথে নেমেছেন।

সালমা জানান, গত কয়েকদিন যাবত দু’টি বাসায় কাজ শুরু করেছেন। তবে সেখান থেকে যা বেতন পাবেন তা দিয়ে তার সংসার চলবে না। তদুপরি শিশুটি নানা রোগ-ব্যাধিতে ভুগছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাসা ভাড়া, খাবার, ওষুধসহ সব খরচ মেটাতে তিনি বাসায় কাজের পাশাপাশি সাহায্যের আশায় পথে নেমেছেন।

এমএফ/জেআইএম