ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

মায়ের জন্য ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় সয়লাব ফেসবুক

সিরাজুজ্জামান | প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ১০ মে ২০২০

‘মা’ শব্দটি পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর। মা ও সন্তানের সম্পর্ক আদি ও অন্তহীন। তাইতো মা দিবসে মাকে নিয়ে সন্তানদের উচ্ছ্বাস, ভালোবাসা, না বলা কথা কিংবা অনুভূতি প্রকাশ পাবে এটাই স্বাভাবিক। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজ (রোববার) মাকে নিয়ে ভালোবাসার প্রকাশ আকাশছোঁয়া। তবে সবাই যে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভালোবাসা প্রকাশ করছেন তাও নয়। আজ সব সন্তানই নীরবে বা সরবে স্মরণ করছেন মাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রাজনীতিক, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী কিংবা গৃহবধূ সবাই মাকে নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করছেন।

বিখ্যাত ফুটবল খেলোয়াড় দিয়াগো ম্যারাডোনার মতে, “আমার মা মনে করেন আমিই সেরা, আর মা মনে করেন বলেই আমি সেরা হয়ে গড়ে উঠেছি।” এতে প্রকাশ পায় সন্তানদের প্রতি মায়ের অকৃ্ত্রিম ভালোবাসা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন, ‘যার মা আছে, সে কখনও গরিব নয়।’

তাইতো মাকে হারানোর বেদনাও উঠে এসেছে অনেকের ফেসবুক পোস্টে।

মায়ের কাছেই আমাদের শিক্ষার হাতেখড়ি। তিনিই আমাদের হাত ধরে অনেক কিছু শেখান। এ জন্য প্রতিটি ধর্মেই মায়ের দেয়া শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তাই তো বুখারি শরিফে ‍উল্লেখ আছে, ‘মা হচ্ছেন সন্তানের আদর্শ বিদ্যানিকেতন। মায়ের আদর অতুলনীয়। মা হতে গিয়ে যে নারী মারা যান, ইসলাম তাকে শহীদের মর্যাদা দিয়েছে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও নিউজ২৪ এর হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমান ‘মা’ শিরোনামে এলবামে নিজের মায়ের সঙ্গে বর্তমান ছবি ও ছোটকালের সাদাকালো ছবি ছাড়াও সন্তানের ছবি দিয়ে লিখেছেন- ‘যতই রাগারাগি করি তোমরাই কিন্তু আমার সব। অনেক অনেক ভালোবাসি তোমাদের। তোমাদের ছাড়া আমার যে আর কিছুই নেই।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলের সংসদ সদস্য শহীদ নুরুল হক হাওলাদারের মেয়ে জোবায়দা হক অজন্তা লিখেছেন, ‘‘মহীয়সী এক নারী আমার মা। যিনি একাধারে আমাদের মা এবং বাবা দুটোর দায়িত্বই পালন করেছেন। আমার বাবা এমপি নুরুল হক হাওলাদারকে দুস্কৃতিকারীরা যখন হত্যা করে তখন আমরা তিন ভাই-বোন ছিলাম অবুঝ শিশু। মা ছিলেন সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ যুবতী।’

MA1

তিনি বলেন, ‘পিতৃহীন আমাদের তিন ভাই বোনকে মানুষের মতো মানুষ করেছেন। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও তিনি আমাদের বাবার অভাব বুঝতে দেননি। সমস্ত সত্তা দিয়ে তিনি আমাদের আগলে রেখেছেন। আমি এখন তিন সন্তানের মা। আমি বুঝি, সন্তান লালন পালন করা কত কষ্টের, কতটা ধৈর্যের বিষয়। কোনো দিবস নয়, প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য মা দিবস। সবার কাছে মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। বৈশ্বিক দুর্যোগ থেকে যেন মাকে আল্লাহ হেফাজত করেন।’

টাইমস অব বাংলাদেশের সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য তার মায়ের ছবি দিয়ে লিখেছেন –'মা'।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আশরাফ আলী লিখেছেন, ‘‘মা’র পদতলে সন্তানের বেহেশত। মা দিবসে পৃথিবীর মায়েদের প্রতি রইল শ্রদ্ধা, ভালোবাসা।’’

ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক তার সঙ্গে মায়ের কোলো বসা আর স্টুডিওতে তোলা শিশুকালের সাদাকালো ছবি দিয়ে লিখেন, বিশ্ব মা দিবস.....মা কে শুধু মা দিবসে নয়, অন্তরে মা থাকে সবসময়.....! পৃথিবীর প্রতিটি মা'ই তার সন্তানকে তার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে....! মা দিবসে পৃথিবীর সকল মাকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই। পৃথিবীর সকল মা ভালো থাকুক...।’’

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল লিখেছেন, “আমার মা আমার জান্নাত! আলহামদুলিল্লাহ, আমি সৌভাগ্যবান, আমি আমার মা’য়ের সাথে থাকি। আমার মা’র নেক হায়াত এবং সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া চাই।’’

মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘বিশ্ব মা দিবস’ পালিত হয়। আজ থেকে বহু বছর আগে এক মেয়ে তার মায়ের জন্য প্রবর্তন করেছিলেন মা দিবস। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস ও তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জার্ভিসের উদ্যোগে প্রথম মা দিবস পালিত হয়। আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশন এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।

তার মা অ্যান মেরি সারাজীবন অনাথদের সেবা করে জীবন কাটিয়েছেন। ১৯০৫ সালে মারা যান মেরি। অনাথদের জন্য মেরির উৎসর্গিত জীবনের কথা অজানাই থেকে যায়। লোকচক্ষুর আড়ালে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন তার মেয়ে আনা জার্ভিস। জার্ভিস নতুন এক উদ্যোগ নেন। মা অ্যান মেরির মতো ছড়িয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় ‘মা দিবস’। ১৯১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।

এইচএস/জেডএ/এমএস