রাজধানীতে গণপরিবহন অবরোধ
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও গাড়ির কাগজপত্র না থাকার অভিযোগে মিরপুরে সিএনজি লেগুনা ও বাসকে জরিমানা করায় ওই রুটসহ বেশ কয়েকটি রুটে চলাচলরত সব গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। পরিবহণ শ্রমিকদের আকস্মিক অবরোধে বিপাকে পড়েছে হাজারো যাত্রী।
রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু করে বেলা ১২টা পর্যন্ত বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ের উদ্যোগে ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বিআরটিএ-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম আল আমিন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত কর্তৃক ১৩টি পরিবহনকে জরিমানা ও মামলা দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে মিরপুর আগারগাঁও, মহাখালী, শ্যামলী ও গাবতলী রুটে গণ পরিবহণ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে শ্রমিকরা। আর এর প্রভাব পড়েছে পুরো রাজধানীতে।
এ ব্যাপারে লেগুনা মালিক সমিতির সভাপতি সেলিম উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, পূর্ব থেকে কোনো ধরণের সতর্ক বার্তা ছাড়াই হঠাৎ করে অভিযান শুরু করেছে বিআরটিএ। তাদের দাবি কিছু গাড়ি কাগজ পত্র না থাকলেও অধিকাংশ পরিবহনের কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু আদালত গণ হারে জরিমানা আদায় ও মামলা দিয়েছে। মনির হোসেন নামে হিমাচল বাসের এক কনডাক্টরকে কারাণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর প্রতিবাদেই পরিবহণ ধর্মঘট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন মিরপুর-আজিমপুর-গুলিস্তান-মতিঝিল, গাবতলী-উত্তরা-আজিমপুর, গাবতলী-গুলশান-বাড্ডা রুটসহ মিরপুর ১১ নম্বর হয়ে চলাচলরত বিভিন্ন রুটের যাত্রীরা।
বিকেল ৫টার পর্যন্ত সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওইসব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মিরপুরে বিক্ষুব্ধ পরিবহণ শ্রমিকরা সরকারি পরিবহণ বিআরটিসিসহ বেশ কিছু বাসে ভাংচুর ও ফিরিয়ে দিয়েছে। সে কারণে মিরপুর-১০ এলাকা থেকে কোনো পরিবহন মিলছে না।
কল্যাণপুরেও একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন মিলন চক্রবর্তী। অন্যদিকে পূরবী সিনেমা হলের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত সোহেল রানা জানান, খিলক্ষেত এলাকা থেকে তিনিসহ অনেকেই আটকা পড়েছেন।
শ্রমিকদের দাবি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে তাদের কয়েকজন চালককে জরিমানা ও একজন কনডাক্টরকে এক মাসের সাজা দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা দাবি করেন, নানা অজুহাতে নিয়মিতই বিআরটিএ হয়রানি করছে।
তবে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিকদার শামীম হোসেন ও শেরে বাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল গণেশ বিশ্বাস দাবি করেছেন ওই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষের অপারেটর বজলুর রহমান জানান, “মিরপুরে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছিল। বিভিন্ন গাড়ির কাগজপত্র দেখতে গেলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করে। তবে এখন যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বাস মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ভাড়া বাড়ানোর পর কিছুটা অনিয়ম হয়। অনিয়মের অভিযোগে ম্যাজিস্ট্রেট চালক ও শ্রমিকদের বাস নামিয়ে কারাদণ্ড দিয়েছেন। সে কারণে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। তবে তিনি অবরোধ প্রত্যাহারের জন্য শ্রমিকদের অনুরোধ করেছেন বলেও জানান।
জেইউ/এসকেডি/আরআইপি