করোনা মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় উন্নয়ন সহযোগীদের বাংলাদেশে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াস) কর্মসূচিতে সহায়তা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে তিনি মিন্টু রোডে সরকারি বাসভবন থেকে "কোভিড-১৯ কালীন ও পরবর্তীতে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াস) সংক্রান্ত বাংলাদেশের কৌশলপত্র" বিষয়ক এক ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান।
মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসজরিনিত মহামারী ছড়িয়ে পড়ায় তা প্রশমনে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সংগঠিত আছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ মহামারির ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো বলে আশা করি।
মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াস) কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছে। ইউনিসেফসহ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে। এ কৌশলপত্রে উল্লেখিত আর্থিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য তাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি করা দরকার।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সারা দেশে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন, সাবান ও স্যানিটাইজারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ, জীবাণুনাশক ছেটানোসহ কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান আছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগের ও সক্ষমতার প্রশংসা করেন। তারা শিগগিরই বাংলাদেশকে সহযোগিতার জন্য তাদের আর্থিক প্রস্তাব পেশ করবেন বলে জানান।
বিশেষত যারা দুর্গম এলাকায় বাস করেন এবং প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করতে তেমনভাবে সক্ষম নন তাদের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া জরুরি বলেও তারা মত প্রকাশ করেন। মানবিক কারণে এই জরুরি পরিস্থিতিতে তারা সহায়তার আশ্বাস দেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, ইউনিসেফ, বুয়েট, আইসিডিডিআরবি এবং শিক্ষাবিদ ড. মজিবুর রহমান কর্তৃক এ কৌশলপত্র তৈরি করা হয়েছে। এতে স্বল্পমেয়াদি (জুন,২০২০ পর্যন্ত), মধ্যমেয়াদি (জুলাই - ডিসেম্বর,২০২০) এবং দীর্ঘমেয়াদি (জানুয়ারি,২০২১- ডিসেম্বর,২০২২) পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রায় ৮৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার যোগান দেবে ২৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আরও প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন হবে। উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসগুলোর কাছে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হয়।
ভিডিও কনফারেন্সে আরও অংশ নেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত সচিব জহিরুল ইসলাম, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী সাইফুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ওয়াস কর্মসূচি প্রধান দারা জনস্টন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী কার্যালয়ের উপদেষ্টা হেনরী গ্লোরিয়েক্স, ফ্রান্স ডেভলপমেন্ট এজেন্সির প্রকল্প সমন্বয়কারী ফেনি নেসেন প্রমুখ।
এমইউএইচ/এনএফ/পিআর