ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

বিল দাখিলের ৩ দিনের মধ্যে পেনশন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ওয়েবসাইটে

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:১৮ পিএম, ০৫ মে ২০২০

সরকারি চাকরিজীবীরা সারাজীবন চাকরি করে জীবনসায়াহ্নে পেনশনের টাকা তুলতে গিয়ে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়েন। তবে পেনশনে যাওয়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভোগান্তি কমাতে ছুটি নগদায়ন মঞ্জুরির আদেশ বিল দাখিলের তিন কর্মদিবসের মধ্যে পেনশনভোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পেনশনের অর্থ দেয়া হবে উল্লেখ করে গত ফেব্রুয়ারিতে পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

এ সুবিধা পেতে নতুন করে বেশকিছু কাগজপত্র জমা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। আর এসব ফরম ও কাগজপত্র অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট পাওয়া যাচ্ছে। গত ১৯ মার্চ স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি নতুন পরিপত্র আজ (মঙ্গলবার) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মচারীগণের পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০’ এর ৪.০৯ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর নিজের এবং তার মৃত্যুর পর তার পরিবারের পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তির আবেদনের নিমিত্তে পেনশন আবেদন ফরম, সনদ ও কাগজপত্রাদি সংশােধিত আকারে প্রণয়ন করা হয়েছে। এগুলে হচ্ছে- প্রত্যাশিত শেষ বেতনপত্র (ইএলপিসি) (সংযােজনী-১), প্রাপ্তব্য পেনশনের বৈধ উত্তরাধিকারী ঘােষণাপত্র (সংযােজনী- ২), উত্তরাধিকার সনদপত্র ও নন-ম্যারিজ সাটিফিকেট (সংযােজনী- ৩), পেনশন ফরম ২.১ (সংযােজনী- ৪), পারিবারিক পেনশন ফরম ২.২ (সংযােজনী- ৫), নমুনা স্বাক্ষর ও হাতের পাঁচ আঙুলের ছাপ (সংযােজনী- ৬), আনুতােষিক ও অবসরভাতা উত্তোলন করার জন্য ক্ষমতা অর্পণ ও অভিভাবক মনােনয়নের প্রত্যয়নপত্র (সংযােজনী- ৭) এবং না-দাবি প্রত্যয়নপত্র (সংযােজনী-৮)।

এ আট ধরনের ফরম, সনদ ও কাগজপত্রাদির মুদ্রণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাই বর্তমানে এসব ফরম, সনদ ও কাগজপত্রাদি অর্থ বিভাগের (ওয়েবসাইট) থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে হবে। এ অবস্থায় “সরকারি কর্মচারীগণের পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০”- এ সংযােজিত উল্লিখিত ফরম, সনদ ও কাগজপত্রাদি পেনশন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরােধ করা হলাে।

এদিকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়ে পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ওই আদেশে বলা হয়, ছুটি নগদায়ন মঞ্জুরির আদেশ বিল দাখিলের তিন কর্মদিবসের মধ্যে পেনশনভোগীর ব্যাংক হিসাবে ওই টাকা চলে যাবে।

এছাড়া মাসিক সুবিধার টাকা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দেয়া হবে। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়, বিভাগ শুধু পেনশনের বিষয়টি দেখার জন্য একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে।

আদেশে বলা হয়, অবসরগ্রহণকারী সরকারি কর্মচারী ও সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর ক্ষেত্রে তাদের পরিবারবর্গের অবসরজনিত সুবিধাদি সঠিক সময়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ‘বেসামরিক সরকারি কর্মচারীদের পেনশন মঞ্জুরি ও পরিশোধ সংক্রান্ত বিধি/পদ্ধতি অধিকতর সহজীকরণ আদেশ, ২০০৯’ কে নিম্নরূপ আদেশ দ্বারা প্রতিস্থাপন করার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। যা ‘সরকারি কর্মচারীগণের পেনশন সহজীকরণ আদেশ, ২০২০’ নামে অভিহিত হইবে।

নতুন জারিকৃত পেনশন সহজীকরণ আদেশে যা আছে

সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সহজীকরণ আদেশে বলা হয়, অবসরগ্রহণের আগে ইএলপিসি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চাকরিজীবীকে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ওই আবেদনে প্রাপ্য ছুটি, ছুটি নগদায়ন, ভবিষ্যৎ তহবিলের স্থিতি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। এই আবেদন পাওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে। বিশেষ করে সরকারের আদায়যোগ্য অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করে আদায়ের ব্যবস্থা করবে। এই প্রক্রিয়ার পর তিন মাসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ অবসরোত্তর ছুটি, ছুটি নগদায়ন ও পেনশন মঞ্জুরিপত্র জারি করবেন।

সেখানে বলা হয়, ছুটি নগদায়ন মঞ্জুরির আদেশ পাওয়ার পর বিল দাখিলের তিন কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পেনশনভোগীর ব্যাংক হিসাবে ওই টাকা চলে যাবে।

পেনশন মঞ্জুরির কাগজপত্র প্রাপ্তির ১০ কর্মদিবসের মধ্যে পেনশন নির্ণয়-সংক্রান্ত হিসাব যথাযথভাবে যাচাইপূর্বক সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিস পেনশন পরিশোধ আদেশ (পিপিও) জারি করা হবে। আনুতোষিকের টাকার চেক বা ইএফটি পিআরএল শেষ হওয়ার পর দিন চূড়ান্ত অবসরগ্রহণের দিন সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর নিকট বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।

অনুত্তোলিত পেনশন এবং বকেয়া পেনশনের ক্ষেত্রে সাত কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তিকরণ: ইএফটি জেনারেট করতে হইবে। অডিট আপত্তি থাকিলে তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করিতে হইবে। চূড়ান্ত অবসর গ্রহণের এক বৎসরের মধ্যে বিভাগীয় মামলা থাকলে নিষ্পত্তি করিতে হইবে। প্রতি মাসের পেনশন পরবর্তী মাসের এক তারিখে পেনশনারের ইএফটির মাধ্যমে তাহার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করতে হবে।

এছাড়া পেনশন সংক্রান্ত সব ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কর্মকর্তাদের বদলিতে এলপিসি ইলেকট্রনিক্যালি পূরণ করতে হবে এবং অনলাইনে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে। কোনো সরকারি কর্মচারী পিআরএলে যাওয়ার তিন বছর আগের কোনো কাগজপত্র, রেকর্ড বা না-দাবি প্রত্যয়নপত্র তার কাছে চাওয়া যাবে না।

এমইউএইচ/বিএ/এমকেএইচ