অ্যাপে ধান কেনা ব্যর্থ হওয়ার শঙ্কা
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশের ২২ উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে সরকারের ধান সংগ্রহ কর্মসূচি ব্যর্থ হতে পারে— এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ অ্যাপে ধান কেনার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ উপজেলায় কৃষক নিবন্ধন ও ধান বিক্রির আবেদন সন্তোষজনক নয়।
এজন্য অ্যাপে ধান কেনা সফল করতে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রোববার (৩ মে) খাদ্য অধিদফতর থেকে ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমে ২২ উপজেলায় ‘ডিজিটাল খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা ও কৃষকের অ্যাপ’ এর মাধ্যমে সংগ্রহের অনুমোদন দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।
উপজেলাগুলো হলো- সাভার, গাজীপুর সদর, নরসিংদী সদর, মানিকগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ সদর, রাজবাড়ী সদর, টাঙ্গাইল সদর, ময়মনসিংহ সদর, জামালপুর সদর, শেরপুর সদর, ভোলা সদর, নওগাঁ সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর, দিনাজপুর সদর, ঝিনাইদাহ সদর, যশোর সদর, হবিগঞ্জ সদর, মৌলভীবাজার সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বরিশাল সদর।
এবার বোরোতে ১৯ লাখ ৫০ হাজার টন ধান-চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ২৬ টাকা কেজি দরে আট লাখ টন ধান, ৩৬ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৩৫ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল কেনার অনুমোদন দিয়েছে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি।
বোরো ধান গত ২৬ এপ্রিল থেকে কেনা শুরু হয়েছে। ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হবে, সংগ্রহ শেষ হবে ৩১ আগস্ট।
আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে ২২ উপজেলায় ধান সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনার প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শতভাগ সফল করতে মাঠপর্যায়ে নির্দেশনা এবং মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালানোর জন্য পত্র দেয়া হয়।
অ্যাপের মাধ্যমে কৃষক নিবন্ধন ও ধান বিক্রির আবেদনের সময়সীমা ৭ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও এতে জানানো হয়।
‘কিন্তু ২ এপ্রিল পর্যন্ত কৃষকের অ্যাপের অনলাইন প্রতিবেদনের অগ্রগতি তুলে ধরে নির্দেশনায় বলা হয়, সাভার, নরসিংদী সদর, রাজবাড়ী সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বরিশাল সদর উপজেলার কৃষক নিবন্ধনধারীর আবেদন সন্তোষজনক নয়’ বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়, ময়মনসিংহ সদর ও জামালপুর সদর উপজেলার কৃষকের ধান বিক্রির আবেদন সন্তোষজনক নয়।
তবে টাঙ্গাইল সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর, ঝিনাইদহ সদর ও নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে বিপুল পরিমাণ আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
‘এ প্রেক্ষাপটে কৃষকরা অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম সফল করতে সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যক্রম নিয়মিত মনিটরিং করে বহুল প্রচারণাসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি নির্দেশনা দেয়া প্রয়োজন।’
এমতাবস্থায় কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শতভাগ সফল করতে নিয়মিত মনিটরিং করে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
আরএমএম/এমএআর/এমএস