জনজীবন থমকে গেলেও প্রকৃতিকে স্বস্তি দিয়েছে করোনা
করোনাভাইরাসের প্রভাবে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে রাজধানী ঢাকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ থমকে গেছে। ইট-পাথরের যান্ত্রিক এই নগরীর নিত্যদিনের চিত্র ছিল ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জীবন ও জীবিকার তাগিদে লাখো মানুষের ছুটে চলা।
এছাড়া দিনভর পাড়ার অলিগলি থেকে শুরু করে রাজপথে হাজার হাজার রিকশা, মোটরসাইকেল, বাস, মাইক্রোবাস, জিপগাড়ি ও প্রাইভেটকারের ছুটে চলা, হর্ন বাজিয়ে শব্দদূষণ, যানজট, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও ধুলোবালিতে দম ফেলা দায় হয়ে পড়তো। আর এখ এর কোনা বালাই নেই। করোনা সংক্রমণের ভয়ে নগরবাসী আজ গৃহবন্দী।
করোনার কারণে নগরবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে, তবে এক মাসেরও বেশি সময় শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণ না থাকায় প্রকৃতিতে লেগেছে সবুজের ছোঁয়া।
নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য রাস্তার ডিভাইডারে বেশ কিছু গাছ লাগায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশন। ধুলাবালি ও বায়ুদূষণের কারণে এসব গাছপালার অধিকাংশই রঙহীন মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু গত এক মাসে রাস্তার ডিভাইডারের এ গাছগুলোতে নতুন পাতা গজিয়ে সবুজ রঙ স্বরূপে ফিরেছে। কোনো কোনো গাছে ফুল ফুটেছে, আবার কোনো কোনো গাছে ফুলের পাপড়ি এসেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। বিশেষ করে সন্ধ্যা ৬টার পর থকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রাস্তা বের না হওয়ার নির্দেশ রয়েছে। এ কারণে সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানী ঢাকা জনশূন্য বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়।
রোববার (২৬ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, রাজপথের ডিডাইডারের লাগানো বেশিরভাগ গাছ নতুন পাতা এসেছে। জনশূন্য রাস্তায় বাতিতে গাছের পাতাগুলো বাতাসে দুলছে। কোনো কোনো গাছে ফুলও ফুটতে দেখা গেছে। বেশকিছু মৃতপ্রায় গাছে নতুন করে পাতা গজিয়েছে। দিনে বৃষ্টি হওয়ায় গাছে একটুও ধুলোবালি নেই। বৃষ্টির পানিতে সব ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে। করোনায় জনজীবন থমকে গেলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছে প্রকৃতি।
এমইউ/এমএসএইচ