ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

দ্বিতীয় ধাপে দেড় হাজার কৃষি যন্ত্র পাচ্ছে কৃষক

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২০

করোনাভাইরাসের কারণে বোরো মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কটের আশঙ্কায় দ্বিতীয় ধাপে আরও ১০০ কোটি টাকার প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় নতুন করে দেড় হাজার কৃষিযন্ত্র বরাদ্দ দিচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

বুধবার (২২ এপ্রিল) কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবালয় অংশে পরিচালন বাজেটের বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহায়তা সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বেসরকারি কৃষিযন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এসিআই মোটরসের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটতে প্রথম ধাপে ১০০ কোটি টাকার প্রায় এক হাজার ২০৪টি কৃষিযন্ত্র বরাদ্দ দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশেই দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এর মধ্যে হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। সারাদেশে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে চলতি মাসের শেষে। ফলে বোরো ধান ঘরে তুলতে দ্রুত এসব যন্ত্র কৃষকের কাছে পৌঁছানো হবে।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে যন্ত্র দেয়ার ক্ষেত্রে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপার মেশিনের পাশাপাশি রাইস ট্রান্সপ্লান্টারও গুরুত্ব পাবে। এছাড়া এসব যন্ত্র শুধু বোরো মৌসুমেই যাতে কৃষক পায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে। হাওরের কৃষকরা সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে এসব যন্ত্র কিনতে পারবেন। অন্যান্য অঞ্চলের কৃষকরা ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে কিনতে পারবেন এসব যন্ত্র। ইতিমধ্যে শ্রমিক সংকটে কৃষযন্ত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবার এসব যন্ত্র কৃষকের কাছে সময়মত বিশেষ করে ধান কাটার আগেই পৌঁছাতে হবে। বোরো মৌসুম শেষ হলে তখন দীর্ঘ সময়ের জন্য চাহিদা শূন্য থাকবে এ সব যন্ত্র।

এ বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বোরো ধানের জন্য যন্ত্র ও শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আগের বরাদ্দকৃত অর্থের মাধ্যমে যন্ত্র কৃষক পর্যায়ে ছাড়করণ করা হয়েছে। নতুন করে আরও একশ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বেসরকারি পর্যায়ে মেশিন বিপণনকারীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যন্ত্র ও শ্রমিকের যৌথ প্রয়াসেই এবারের বোরো মৌসুমের ধান কাটা সম্ভব হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কৃষকরা ভালোভাবেই ধান ঘরে তুলতে পারবেন।

জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটাসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের জন্য যন্ত্রের চাহিদা নিরূপণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। সেজন্য প্রথম ধাপে সারাদেশে ৮০৩ কম্বাইন হারভেস্টার ও ৪০০ রিপার মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়।

সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানান, করোনাভাইরাসের কারণে বোরো ধান কাটার শ্রমিকের সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ধাপের ১০০ কোটি টাকার মাধ্যমে কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপারসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অবশিষ্ট ১০০ কোটি টাকার যন্ত্র কৃষকের কাছে দ্রুত পৌঁছানো হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে প্রায় ৪৫ লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় দুই কোটি চার লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতিমধ্যে হাওর অঞ্চলে ধান কাটা শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলা কৃষি শ্রমিকের তীব্র সংকট রয়েছে। আবার উদ্বৃত্ত অঞ্চলগুলো থেকে পর্যাপ্ত শ্রমিক আসতে পারছে না। তবে কৃষি মন্ত্রণালয় শ্রমিক সংকট মেটাতে তালিকা তৈরি করছে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠাচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ের কৃষি অফিস। এছাড়া নতুন যন্ত্রের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব অঞ্চলে আংশিক সচল যন্ত্র রয়েছে সেগুলোকে দ্রুত মেরামত করা হচ্ছে।

এফএইচএস/এএইচ/এমকেএইচ