সংক্রমণ বাড়ছে গাজীপুরে, এরপর নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ
ঢাকা মহানগরীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। নতুন করে সংক্রমিত এলাকা হয়ে উঠেছে গাজীপুর। গাজীপুরের পরই দ্রুত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানান রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি বলেন, ‘জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে নতুন রোগী আমরা যাদেরকে দেখতে পেয়েছি, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে ঢাকা শহরে, শতাকরা ৩২ ভাগ। এরপরই নতুন একটি সংক্রমিত এলাকা দেখতে পাচ্ছি, গাজীপুর। গাজীপুরের পরই নতুন সংক্রমিত এলাকা নরসিংদী। এর পরের সংক্রমিত এলাকা কিশোরগঞ্জ।’
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীরা শতকরা ২৭ ভাগ, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা শতকরা ২২ ভাগ, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা শতকরা ১৯ ভাগ আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণরা- বলেন আইইডিসিআর পরিচালক।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) পর্যন্ত দেশে ১৮টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হলেও আজ ১৯টি ল্যাবের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ল্যাবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। যশোর ও তার আশেপাশের জেলাগুলো অর্থাৎ ঝিনাইদহ, নড়াইল থেকে এখন যেসব নমুনা সংগৃহীত হবে, সেগুলো যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা করা হবে।’
শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে বলা হয়, মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও নয়জন মারা গেছেন। ফলে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৪ জনের। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩০৬ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ১৪৪ জনে।
করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ২৪৪টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নতুন করে যুক্ত হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ ১৯টি ল্যাবরেটরিতে মোট দুই হাজার ১৯০টি নমুনার পরীক্ষা হয়। এতে আরও ৩০৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে দুই হাজার ১৪৪। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও নয়জন। এতে মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৮৪। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও আটজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ জনে।
বুলেটিনে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬৬ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয়। আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৩২ জন। হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে আরও তিন হাজার ৬৪১ জনকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ১৭৪ জনকে। সবমিলিয়ে তিন হাজার ৮১৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। আর এই সময়ে কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পান চার হাজার ২৬ জন।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
পিডি/এমএআর/এমকেএইচ