হাট-বাজারে ঘোরাফেরা, ত্রাণ বিতরণেও সংক্রমণ বাড়ছে
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে আরও বেশি সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। লকডাউন আরও কার্যকর করা প্রয়োজন। বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে হাট-বাজার, দোকানে ঘোরাফেরা… সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি হচ্ছে। রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন অবাধে চলাচল করছে। ত্রাণ বিতরণেও আক্রান্ত হচ্ছে। এসব কারণে ঝুঁকির আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।’
শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনলাইন ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
সংক্রমণের আরও কারণ ব্যাখ্যা করে জাহিদ মালেক বলেন, ‘যারা বহুতল ভবনে থাকেন, লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, একে-অপরের সাথে দেখা না হলেও সংক্রমণের হার বাড়ছে। আপনাদের ভবনের লিফটের ভেতরে ও বাইরে বিশেষ করে লিফটের বোতাম, সিঁড়ির হ্যান্ডেল; হ্যান্ডেল স্যানিটাইজ (জীবাণুমুক্ত) করে রাখুন। এগুলো সংক্রমণের উৎস।’
‘সমস্যা হলো রোগীরা টেস্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করে না এবং গোপন করে যায়। ফলে চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছে। এই আচরণ আশঙ্কাজনক। আমি আহ্বান করব, বেশি করে টেস্ট করুন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ দিন।’
কার্যকর লকডাউন করে এখন স্পেন, ইটালি করোনার সংক্রমণ অনেক কমিয়ে এনেছে। তারা এখন শিথিল করতে যাচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ঘরে থাকা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে টেলিভিশনে বেশি বেশি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচারের আহ্বান জানান জাহিদ মালেক। বলেন, ‘দেশের মানুষ এখন ঘরে বন্দি। ফলে তাদের মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। এই সময়ে টিভিতে যদি বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান বেশি প্রচার করা হয়, তাহলে তাদের মানসিক চাপ কমবে বলে আশা করি। প্রতিনিয়ত মানুষকে করোনা প্রতিরোধের বিষয়ে সুপরামর্শ দিলে বেশি উপকারে লাগবে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের মূল হাতিয়ার হলো সংক্রমণ রোধ করা।’
ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামের (পিপিই) কোনো সংকট নেই জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পিপিইর সংকট নেই। পিপিই তৈরি করতে সময় লেগেছে কারণ, এর কাঁচামাল দেশে ছিল না। রফতানি বন্ধ ছিল এবং প্রস্তুতকারকও তেমন ছিল না। আমরা আস্তে আস্তে সেই প্রস্তুতকারক সৃষ্টি করেছি। এখন আমরা প্রত্যেকদিন প্রায় এক লাখ পিপিই সারা বাংলাদেশে দিচ্ছি, এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এর আগে জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। ফলে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২৬৬ জন। ফলে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৮৩৮ জনে।
অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এতে নিজের বাসা থেকে সংযুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
পিডি/এমএআর/পিআর