বিক্ষোভে এসে আশ্বাসে ঘরে ফিরলেন পোশাক শ্রমিকরা
বেকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর বাড্ডায় শামসুর রিজিয়া ফ্যাশনস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভে করেছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা রাস্তায় নামেন। শুরু করেন বিক্ষোভ। তবে বেশিক্ষণ এ বিক্ষোভ চলেনি। স্থানীয় কমিশনার মাসুম গনির আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
বকেয়া বেতনের বিষয়ে পোশাকশ্রমিকরা বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও, বেতন পরিশোধ না করায় ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছেন তারা। করোনা সংকটের মধ্যে বেতন না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের।
আন্দোলনের ফলে পুরো সড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে স্থানীয় কাউন্সিলর, পুলিশ, শ্রমিক প্রতিনিধারা মিলে মালিকপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকে বসেছেন। পাশাপাশি পুলিশ এবং স্থানীয় কাউন্সিলরের অনুরোধে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে দেস। বৈঠকে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছেন এখানকার পোশাক শ্রমিকরা।
এদিকে সম্প্রতি গার্মেন্টস সেক্টরে ছাঁটাই চাকুরীচ্যুতি বন্ধের এবং বকেয়া বেতনের পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
সম্প্রতি গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের বিভিন্ন শিল্প অঞ্চলে গার্মেন্টস সেক্টরে প্রতিনিয়ত শ্রমিকদের ছাঁটাই এবং চাকরিচ্যুতি চলছে। কোনো কোনো কারখানায় শ্রমিকদের নিয়মিত বেতন থেকে ঠকানাের অসৎ উদ্দেশ্যে লে-অফ-এর নােটিশ দিয়ে কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে। অথচ সরকার গার্মেন্টস মালিকদের জন্য বিরাট অংকের আর্থিক প্রণোদনা ঘােষণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রণোদনার আওতায় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারীদের ৩ মাসের বেতন-ভাতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপরও দেশের মুনাফালােভী গার্মেন্টস মালিকেরা শ্রমিকদের বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে
অহােরহ চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই এবং কারখানা লে-অফ ঘােষণা করছে। অথচ এই শ্রমিকদের দিয়েই মাত্র কয়েক লাখ টাকা পুজি এবং অল্প সংখ্যাক মেশিন দিয়ে ছােট গার্মেন্টস থেকে আজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক হয়েছেন অনেকে। তাই শ্রমিকদের কথা ভেবে অবিলম্বে গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে।
অপরদিকে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় খেটে খাওয়া মানুষেরা বাড্ডায় বিক্ষোভ করেন। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও কাজ হয়নি। তখন রাস্তায় রিকশা উল্টে রেখে বিক্ষোভ দেখান তারা। তারা কেউবা বাড়ি বাড়ি কাজ করেন, কেউ রাজমিস্ত্রী, আবার কেউ রিকশাচালক। উত্তর বাড্ডা, মধ্য বাড্ডা, দক্ষিণ বাড্ডা, মেরুল বাড্ডা, বাড্ডা ডিআইটি প্রকল্প, আফতাবনগর নুরেরচালাসহ বিভিন্ন এলাকার অভাবী মানুষেরা বিক্ষোভ করেন।
গতকাল বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছিলেন, কাউন্সিলদের কাছে অনেক ত্রাণ গেলেও তারা এর কিছুই পাচ্ছেন না। মুখ দেখে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে বলে তারা দাবি করেন। এ কারণে ত্রাণ দেয়ার পদ্ধতিতে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর তদারকি চান অনেকে। কেউবা আবার সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ দেয়ার দাবি করেন।
গতকাল সড়কে টানা তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করার পর ঘরে ফিরেন তারা।
এএস/জেডএ/জেআইএম