পাহাড়তলীতে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, সাতকানিয়া ও সাগরিকা লকডাউন
চট্টগ্রামে করোনার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণস্থল হিসেবে চিহ্নিত সাতকানিয়া উপজেলাকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টার দিকে সাতকানিয়াকে লকডাউন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।
এদিকে বন্দনগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা এলাকার হাক্কানি পেট্রোল পাম্প ও আশপাশে একসঙ্গে চার করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জানিয়েছেন, ওই এলাকা আগে থেকেই লকডাউনে আছে।
চট্টগ্রাম নগরের করোনা ক্লাস্টার খ্যাত পাহাড়তলী এলাকা কীভাবে লকডাউন করা যায়, সে বিষয়ে চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং পুলিশ কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে আলম মঙ্গলবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাতকানিয়া উপজেলাকে লকডাউন করার নির্দেশ রাতেই পেয়েছি। এটি বিশাল এলাকা, তাই সময়সাপেক্ষ বিষয়। আশা করছি, বুধবারের (আজ) ভেতর এ কাজ আমরা শেষ করতে পারব।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতের আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিসেসে (বিআইটিআইডি) নতুন ১১৮ নমুনা পরীক্ষায় আরও ১২ জন করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ১১ জনই চট্টগ্রামের।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মঙ্গলবার যে ১১৮টি নমুনা পরীক্ষা হয় তাতে আরও ১২ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে একজন নোয়াখালীর হলেও বাকিরা চট্টগ্রামের। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সাতকানিয়ার ঢেমশার ইছামতি গ্রামের পাঁচজন, নগরের পাহাড়তলী থানা সাগরিকার চারজন, বোয়ালখালীতে একজন ও কাতালগঞ্জ এলাকার একজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করোনা আত্রান্তের ঘটনায় নগরের কাতালগঞ্জ এলাকার একটি ১০ তলা ভবন লকডাউন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি একজন চিকিৎসক। এছাড়া বোয়ালখালী উপজেলার এক ব্যক্তি নগরের ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আজ (গতকাল) তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ এসেছে। এ ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতালের সিসিইউ আংশিকভাবে লকডাউন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিরা হাসপাতালেই কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন।’
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ছিল সাতকানিয়ায়। পরে গত ১২ এপ্রিল সাতকানিয়া পৌর এলাকার এক শিক্ষার্থী ও এক যুবক করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন। সোমবার (১৩ এপ্রিল) করোনায় আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে উপজেলার ইউএনও, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ ৮ জনের।
তবে এদের মধ্যে কার কার করোনা শনাক্ত হয়েছে তা জানা যায়নি। বর্তমানে উপজেলাটির বাসিন্দারা করোনা আতঙ্কে দিন পার করছেন।
নতুন শনাক্ত হওয়া এই ১১ জনসহ চট্টগ্রামে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ২৭ জনে। এদের মধ্যে মারা গেছে এক শিশুসহ তিনজন।
আবু আজাদ/এসআর/জেআইএম