ঢামেক বার্ন ইউনিটে করোনা রোগী চিকিৎসা : চরম আপত্তি সংশ্লিষ্টদের!
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের পোড়া রোগীদের চাঁনখারপুলের শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করে ঢামেক বার্ন ইউনিটকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করার সরকারি নির্দেশে চরম আপত্তি তুলেছেন চিকিৎসক-নার্সসহ সংশ্লিষ্টরা।
ঢামেক বার্ন ইউনিটে কর্মরত চিকিৎসকদের একটি দল আজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে করোনা রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্র খোলা মোটেই উচিত হবে না। এর আশপাশে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থাকায় প্রতিদিন শত শত রোগী ও তাদের অভিভাবক আসা-যাওয়া করেন। হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও এ পথে যাতায়াত করেন। এছাড়াও ডক্টরস কোয়ার্টার এ ক্যাম্পাসে থাকায় ডাক্তারদের পরিবার-পরিজনরাও সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়বেন।
তারা এ সমস্যার ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতাল পরিচালককে অনুরোধ জানান। চিকিৎসকরা তাদের আপত্তির বিষয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতাদেরকেও অবহিত করেছেন।
তবে চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি হননি। তারা বলেছেন, সমস্যার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এখন সিদ্ধান্ত যা নেয়ার তারা নেবেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স জাগো নিউজকে জানান, করোনা রোগীদের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে যে কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত করার সরকারি নির্দেশনা ছিল তাতে ঢামেক বার্ন ইউনিটের নাম ছিল না। ওই তালিকায় চাঁনখারপুলের ৫০০ শয্যার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নাম ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন ঢামেক বার্ন ইউনিট থেকে পোড়া রোগীদের সেখানে স্থানান্তরের নির্দেশনা এলো তা বোধগম্য নয় বরং নতুন ওই হাসপাতালটি এখনও পুরোদমে চালু হয়নি। রোগীর সংখ্যাও অনেক কম। তাছাড়া আইসিইউ বেডসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। তাই সেখান থেকে চিকিৎসাধীন স্বল্পসংখ্যক রোগীকে ঢামেক বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করে বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা হাসপাতালকে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারই শ্রেয় ছিল।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, ৫০০ শয্যার হাসপাতালটির সকল সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো পোড়া রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতেই বিপুল অর্থ ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। তাই এখানে করোনা রোগীদের না রাখাই উত্তম সিদ্ধান্ত।
ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আরিফুল ইসলামের কাছে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে তাদের আপত্তি জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
ঢামেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগের জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেও লাইন ব্যস্ত থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনের কাছে জানতে চাইলে তিনিও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এমইউ/বিএ/পিআর