সুন্দরবন রক্ষায় সিপিবি-বাসদের অভিযাত্রা
রামপাল, ওরিয়ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সুন্দরবন বিধ্বংসী সকল প্রকল্প বাতিল ও প্রাণ-প্রকৃতি পরিবেশ রক্ষার দাবিতে সুন্দরবন রক্ষায় অভিযাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সামাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে এক সমাবেশ শেষে এ যাত্রা শুরু হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা বিদ্যুৎ চাই, তবে সুন্দরবন ধ্বংসের বিনিময়ে নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প পথ রয়েছে সে সব পথ বিবেচনা না করেই সুন্দরবনের ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ভারতের এনটিপিসি`র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপ-বিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সুন্দরবন তো ভারতেও আছে, সেখানে কি এনটিপিসি এ ধরনের প্রকল্প করতে পারতো এমন প্রশ্ন করে বক্তারা আরো বলেন, ভারতে পরিবেশগত প্রভাব পরিমাণ (ইআইএ) গাইডলাইন ২০১০ অনুযায়ী, বনাঞ্চলের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা যায় না।
বক্তারা জানান, একটি কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্প হাজার হাজার টন সালফার, নাইট্রোজেন, ছাঁই, কয়লাধোঁয়া পানি নিঃসরন করে। আর এসবের ফলে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে পরিবেশের।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সুন্দরবনকে ধ্বংস করার জন্য দেশি বিদেশি চক্রান্তকারীরা উঠে পরে লেগেছে। দেশের মানুষ এসব চক্রান্তের কৌশল মেনে নিতে পারে না।
সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, পরিবেশ বিধ্বংসী এই প্রকল্প থেকে সরে আসুন।
তেল গ্যাস বিদ্যুৎ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মোহাম্মাদ বলেন, সুন্দরবন বাংলাদেশের মানুষের অস্তিত্বে অংশ। বাংলাদেশ অরক্ষিত হয়ে যাবে সুন্দরবন ধ্বংস হলে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি এক হাতে সুন্দরবনের মৃত্যু পরয়ানা নিবেন আর অন্য হাতে পরিবেশ কেন্দ্রীক পুরস্কার গ্রহণ করবেন, তা হবে না।
সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, শুধু রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নয়, ইতোমধ্যে ওরিয়নকে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে, বাস্তবে সুন্দরবন নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে পড়বে।
ইতিমধ্যে শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাংকার, ভোলা নদে সারবাহী জাহাজ ডুবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে, ভবিষ্যতে কয়লা পরিবহণের ক্ষেত্রে বিপদ কত ভয়াবহ হতে পারে` বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর আহমেদ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহীন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশিদ প্রমুখ।
এএস/একে/পিআর