দুদক পরিচালকের মৃত্যু : আইসোলেশনে থাকা ছেলের আবেগঘন স্ট্যাটাস
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক জালাল সাইফুর রহমান (৪৫)। সোমবার ভোরে রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
দুদকের চৌকস এ কর্মকর্তার এমন বিদায়ে কাঁদছেন তার স্বজন, বন্ধু, গুণগ্রাহী ও পরিবারের লোকজন। তার কোনো আত্মীয়-স্বজন জানাজায় উপস্থিত হতে পারেননি।
তাকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ পায়নি পরিবারের সদস্যরা। বাবার এভাবে চলে যাওয়া নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যয়নরত একমাত্র ছেলে সামিন রহমানও দিয়েছেন আবেগঘন স্ট্যাটাস।
সোমবার সন্ধ্যায় তার ফেসবুকে ওয়ালে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বাবা (জালাল সাইফুর রহমান, পরিচালক, দুদক) আজকে সকালে সাড়ে ৭টার দিকে কার্ডিয়াক এরেস্টের কারণে মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। উনি গত ৩০ মার্চ করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তবে দুঃখের বিষয় এই যে, উনার মৃত্যুর সংবাদ নিয়ে লেখা প্রতিবেদনেও অনেক ভুল-ভ্রান্তি চোখে পড়ে। সে ভুল-ভ্রান্তিগুলো আমি একটু তুলে ধরতে চাই:
১। আমি উনার একমাত্র সন্তান ছিলাম, আমার কোনো ভাই-বোন নেই।
২। আমি এবং আমার আম্মু দুইজনই পরিপূর্ণরূপে সুস্থ আছি।
৩। আমরা গত ৭ দিন ধরে দুইজনই সেল্ফ আইসোলেশনে আছি, কোনো হাসপাতালে না। আমাদের দুইজনকে আরও ৭ দিন সেল্ফ আইসোলেশনে থাকতে হবে। (সেল্ফ আইসোলেশন বলতে ঘরের মধ্যে নিজেকে আলাদা করে রাখা, কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ কিংবা মেলামেশা না করা।)
সেল্ফ আইসোলেশনের কারণে না বাবার জানাজার অংশ হতে পেরেছি না উনাকে কবর দেওয়ার অংশ হতে পেরেছি, এর চেয়ে কঠিন কিছু আর নেই। উনাকে আজ ৪টার দিকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উনি একজন সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ ছিলেন। উনার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আমার বাবা জীবিকার তাগিদে সরকারি আদেশ না আসা পর্যন্ত ২২ মার্চ পর্যন্ত অফিস করেছিলেন তারপর থেকে তিনি বাসাতেই ছিলেন কিন্তু তবুও রক্ষা পাননি। তাই এখনও যারা ঘরে থাকার বিধিনিষেধ মানছেন না, তাদের সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না বর্তমানে এই মুহূর্তে আমার এবং আমার পরিবারের উপর দিয়ে যা যাচ্ছে সেটা আমার শত্রুকেও মোকাবেলা করতে হোক।
বি.দ্র.: আমার অনেক ফোন আসছে, অনেক মেসেজ আসছে। তাই অনেকের ফোনই ধরতে পারিনি, অনেকের মেসেজেরই সময়মতো জবাব দিতে পারছি না। সে জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’
বিএ/জেআইএম