দেশে আরও ৫ জন করোনায় আক্রান্ত, মোট ৬১
মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ জনে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে কেউ মারা যায়নি। ফলে দেশব্যাপী এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা যা ছিল তাই আছে। মোট মৃত ৬ জন।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন ব্রিফিং শুরু হয়। ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক এ সব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘করোনার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিটের সংকট নেই। রাজধানীসহ সারা দেশে নমুনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরির সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের স্বপ্রনোদিত হয়ে বেশি বেশি করে নমুনা পরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরিতে যোগাযোগের আহ্বান জানান মন্ত্রী। প্রয়োজন ছাড়া বাসাবাড়ি থেকে বের না হতে দেশবাসীকে অনুরোধ জানান তিনি।
ব্রিফিংয়ে যুক্ত হয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরে ১২৬টি ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৩৮৭টি নমুনাসহ মোট ৫১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৫টি নমুনায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার বাইরের ৩টি নমুনাতে করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। তাদের কন্ট্রাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ২৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে আছেন ২২ জন ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ৭ জনসহ ২৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ পর্যন্ত ৬ জন মারা গেছেন।
তিনি জানান, ঢাকায় ৯টি আরটি-পিসিআর এবং ঢাকার বাইরে ৫টিসহ মোট ১৪টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যে সারা দেশে ২৮টি আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষাগার স্থাপিত হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানান, ৬৪ হাজার ৪৮৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ২৩৬ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে এবং ২৪৮ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১৪ জনকে আইসোলেশনে নেয়া হয় এবং ১০ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।
করোনা প্রতিরোধে দেশবাসীকে কোয়ারেন্টাইন বিধিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসে প্রতিরোধে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে সতর্ক থাকলে করোনা বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।’
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে সংক্রমণ বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে করোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৬১ জন। মারা গেছেন ৬ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২৬ জন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।
এমইউ/এফআর/এমএস