বাসা পরিবর্তন নিয়ে বিড়ম্বনায় ভাড়াটিয়ারা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান এ ছুটি আরও বাড়নো হবে। কিছুদিন ধরা চলা এ ছুটির ফলে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না, বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। চলছে না কোনো গণপরিবহন বা যানবাহন।
এদিকে মাসের শেষ দিন আজ। এ অবস্থায় বাসা পরিবর্তন করতে যাওয়া ভাড়াটিয়ারা পড়েছেন মহা বিড়ম্বনায়। বাসা পরিবর্তন করার জন্য চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিক, ভ্যান গাড়ি বা পিকআপ, ট্রাক কিছুই পাচ্ছেন না তারা। এদিকে আজ মাসের শেষ দিনে অথবা আগামীকাল মাসের প্রথম দিনের মধ্যেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বাসা ছেড়ে দিতে হবে তাদের। সেই বাসায়ও আসবে নতুন ভাড়াটিয়া। এ অবস্থায় বাসা পরিবর্তন করা নিয়ে মহাবিপদে পড়েছেন ভাড়াটিয়ারা।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় প্রায় ছয় বছর থেকে ভাড়া বাসায় রয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রাজু আহমেদ। জরুরি প্রয়োজনে মিরপুরে নতুন বাসা নিয়েছেন। সে লক্ষ্যে চলতি মাসের প্রথম দিনই বাসার মালিককে জানিয়ে দিয়েছিলেন ১ এপ্রিল থেকে তিনি নতুন বাসায় উঠবেন। সে অনুযায়ী বাসা মালিক 'টু লেট’ টানিয়েছেন বাসার সামনে। দু-তিন দিনের মধ্যেই বাসা ভাড়া নেয়ার জন্য অন্য ভাড়াটিয়া বাসা নিশ্চিত করে অগ্রিম পরিশোধ করে গেছেন। তিনি ১ এপ্রিল এ বাসায় উঠবেন। সে অনুযায়ী পুরোনো ভাড়াটিয়া রাজু আহমেদকে আজ অথবা আগামীকালের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে হবে।
রাজু আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ভাই যখন বাসা ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেই তখন করোনা পরিস্থিতি এমন ছিল না। নতুন চাকরি, নতুন অফিস মিরপুর হওয়ায় ওইদিকেই বাসা নিয়েছি। সেই বাসায় আজ অথবা আগামীকাল ওঠার কথা। কিন্তু বাসার মালামালসহ নতুন বাসায় শিফট করার জন্য কোনো শ্রমিক, ভ্যান, পিকআপ, ট্রাক কিছুই পাচ্ছি না। সব বন্ধ থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মহাবিপদে পড়েছি। বারবার বাসার মালিক এসে বলছেন তাড়াতাড়ি বাসা ফাঁকা করেন, নতুন ভাড়াটিয়ারা কাল সকালেই আসবে। বাসার আসবাবপত্রসহ সবই গুছিয়ে ফেলেছি। কিন্তু ট্রান্সপোর্ট বা শ্রমিক হিসেবে কাউকে পাচ্ছি না।
অন্যদিকে মালিবাগ থেকে বাসা পরিবর্তন করে উত্তরায় যেতে চাওয়া আরেক ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানও একই সমস্যায় পড়েছেন।
তিনি বলেন, আজকের মধ্যে পুরোনো বাসা ছেড়ে দেয়ার কথা। সকাল থেকে ট্রান্সপোর্ট বা শ্রমিক খুঁজে হয়রান হয়ে গেছি। বাসা পরিবর্তনে সার্ভিস দেয়া স্থানীয় এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। তার প্রায় দ্বিগুণ চার্জ চাইলো। বাধ্য হয়ে তাতেই রাজি হয়েছি।
যদিও তারা বলেছে, সার্ভিসটি দেয়ার তারা চেষ্টা করবে, কিন্তু যদি রাস্তায় কোনো সমস্যা হয় তা আমাকে সলিউশন করতে হবে। ঢাকা শহরের বেশিরভাগ মানুষই ভাড়াটিয়া হিসেবে ভাড়া বাসায় থাকে। ফলে মাসের প্রথম দিন বা শেষ দিন অনেক ভাড়াটিয়াই বাসা পরিবর্তন করে নতুন বাসায় যায়। সে দিকটা সবার বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতিও তাদের ছাড় দেয়া উচিত।
এএস/এএইচ/পিআর