ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

‘ঘরের কোণায় হলেও একটা কিছু ফসল ফলান’

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ১২:১৪ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২০

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে অল্প একটু জমিও যেন পড়ে না থাকে সেজন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। কারও এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। ঘরের কোণায় হলেও একটা কিছু ফসাল ফলান।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) গণভবন থেকে ৬৪ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী এ কথা।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন কী অবস্থা সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। এরপরে কিন্তু আরেকটা ধাক্কা আসবে। সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে। সে কারণে বিরাট একটা অর্থনৈতিক মন্দা আসতে পারে।

‘সেই মন্দা মোকাবেলায় চিন্তাভাবনা এখন থেকে আমাদের করতে হবে, পরিকল্পনা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাদ্য নিরাপত্তা। এক্ষেত্রে আমাদের একটা সুবিধা হল আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে।’

তিনি বলেন, আমাদের জাতির পিতা যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে হাত দেন, তখন অনেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিল- এমন একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ যেখানে ৮২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে, এ কাজ আপনি কীভাবে করবেন? তিনি (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বলেছিলেন- আমার মাটি আছে, মানুষ আছে। আমার মাটি, মানুষ নিয়েই দেশ গড়ে তুলব। আমাদেরও সেই কথা, আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে।

এ সময় কৃষিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের খাদ্য উৎপাদন যেন অব্যাহত থাকে। এ বিষয়ে সকলকে নজর রাখতে হবে। খাদ্য উৎপাদনের জন্য যা যা উপকরণ দরকার, তা যেন মানুষের কাছে পৌঁছে, এ বিষয়ে আমাদের কৃষির সাথে যারা সম্পৃক্ত আছেন তারা উদ্যোগ নেবেন।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে। আমরা যদি এটা অব্যাহত রাখতে পারি আমাদের দেশের চাহিদা মেটাতে পারব। পাশাপাশি আমরা অন্য দেশের প্রয়োজন হলে সাহায্য করতে পারব। আল্লাহর রহমতে সেইসব ক্ষমতা আমাদের আছে।

‘কাজেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আপনারা এখন থেকেই উদ্যোগ নেবেন। যার যতটুকু জমি আছে, ঘরের কোণে একটুখানি জমি থাকলেও ফসল ফলান, তরি-তরকারি করেন, হাঁস-মুরগির খামার বা মাছের চাষ করা বা ছাগল, গরু, ভেড়া- যাইহোক, যে যা পারেন করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা দরকার এখন থেকে উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের সব শ্রেণীর মানুষের কিছু জায়গা জমি থাকে, সেখানে কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে। এই উদ্যোগ নিলে আমি বিশ্বাস করি আমরা বিশ্বমন্দা কাটিয়ে উঠতে পারব।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দরিদ্রদের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিত্তবানদের সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলাম। অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তবে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কেউ দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তা হবে দুঃখজনক। এটা আমরা সহ্য করব না।

তিনি বলেন, ছুটি ঘোষণার কারণে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের সমস্যা হচ্ছে। কৃষক, চা শ্রমিক, হিজড়া, বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি কষ্ট পাচ্ছে। তারা দৈনন্দিন কাজে যেতে পারছে না। তাদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদের সামাজিক কর্তব্য। সেখানে ১০ টাকা কেজি চালসহ নানা সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের কাছে সাহায্য ও খাদ্যদ্রব্য পাঠাতে হবে।

‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাইকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রতিটি ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা করতে হবে। সেই অনুযায়ী সবাই যেন সাহায্য পায়। কেউ যেন বাদ না পড়ে।’

তিনি বলেন, সাহায্য পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। কোনো রকম দুর্নীতি হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। দুঃসময়ে কেউ সুযোগ নিলে, কোনো অভিযোগ পেলে আমি কিন্তু তাকে ছাড়ব না। বিন্দু পরিমাণ অনিয়ম সহ্য করা হবে না।

এমইউ/এমএএস/এইচএ/এমকেএইচ